লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
পদ্মায় ফের পানি বৃদ্ধি
লালপুরে তলিয়ে গেছে সাড়ে ৪ হাজার বিঘা জমির ফসল
নাটোরের লালপুর
নাটোরের লালপুরে পদ্মানদীতে দ্বিতীয় দফায় আকস্মিকভাবে পানি বৃদ্ধিতে চরাঞ্চলসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সাড়ে ৪ হাজার বিঘা জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। একদিকে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি অন্যদিকে লাগাতার ভারী বর্ষনে ফসল তলিয়ে গেছে।
জানা গেছে, গত বুধবার ঈশ্বরদী হার্ডিং সেতু পয়েন্টে পানির লেভেল ১২ দশমিক ৩২ মিটার। সে অনুযায়ী বর্তমানে লালপুরে পদ্মার পানি বিপদ সীমার দেড় মেটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল আলম চৌধুরী জানান, আগামী পাঁচ থেকে সাত দিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে।
এদিকে সরজমিনে পদ্মার চর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গত দুইদিন পদ্মা পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিলমাড়ীয়া ইউনিয়নের নওশারা সুলতানপুর, চাকলা বিনোদপুর, দিয়াড়শংকরপুর, আরাজি বাকনাই, রসুলপুর ও মোহরকয়া আংশিকসহ প্রায় ১৮টি চর এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
বিলমাড়ীয়া গ্রামের মুনতাজ আলী নামে কৃষক জানান , তার ৩ বিঘা জমিতে মুলা ও বেগুনের আবাদ তলিয়ে গেছে। আরাজি বাকনাই চরের কৃষক আলাল আলী জানান তার মুলা, গাজর বেগুন প্রায় সহ সাড়ে ৪ বিঘা জমির ফসল ডুবে গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এবার ৪১০ হেক্টর আখ, ৪৫ হেক্টর শাকসবজি, ১০ হেক্টর কলা, ও ১০ হেক্টর মাসকালাই পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া চরাঞ্চল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গোখাদ্য সংকটে বিপাকে পড়েছে এখানকার গরু মহিষ খামারিরা। ইলশামারী চরের খামারী আরিফ মন্ডল জানান, গরু মহিষ নিয়ে চরম দুর্ভোগে আছি কোথাও কোন ঘাষ নেই সব তলিয়ে গেছে।
বিলমাড়ীয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য লাল মোহম্মদ জানান, গত দুদিন আকস্মিক পানি বৃদ্ধিতে আমার ওয়ার্ডের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ফসলি ক্ষেত। নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে প্রায় পাঁচশ পরিবার পানিবন্দি হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড় জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সাড়ে ৪ হাজার বিঘা জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। নদীর পানি কমে যাওয়ায় কৃষকরা নতুন করে ফসল আবাদ করেছে। হঠাৎ পানি বৃদ্ধি হওয়ায় এগুলো ডুবে গেছে। তবে পানি কমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান বলেন, আমদের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দিয়েছি সার্বিক খোজখবর রাখার জন্য। কৃষি বিভাগ চর এলাকায় গেছে। ফসলের ক্ষতির তালিকা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
"