জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
বন্যার প্রভাব
জগন্নাথপুরে ১৯ সড়কে ক্ষতি ৮০ কোটি টাকা
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় প্রায় ১৯টি সড়ক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় যানবাহন ও জনসাধারণের চলাচলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ২০২২ সালের জুন থেকে ২৪ সালের জুলাইয়ে তিন দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বেশির ভাগ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যা পরে সংস্কার হয়নি। পরে ২০২৪ সালের জুন-জুলাইয়ে বন্যায় ফের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলায় প্রায় ১৯টি সড়ক। এমনই তথ্য জানান উপজেলা প্রকৌশলী।
জানা গেছে, উপজেলার প্রায় ১৯টি গ্রামীণ জনপদের রাস্তা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সড়ক গুলোর মধ্যে, রানীগঞ্জ-বাগময়না খাগাউড়া, স্বজনশ্রী সড়ক, রানীগঞ্জ শিবগঞ্জ সড়ক, ইসলামপুর-স্বাধীন বাজার সড়ক, মশাজান, আলীপুর-খানপুর ও জালালপুর সড়কসহ আরো বেশ কিছু সড়ক।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে জানান, এসব সড়ক গুলো বেশিরভাগই চলাচলের অনুপযোগী। তবুও প্রয়োজনের তাগিদে ঝুঁকি নিয়ে এসব সড়ক পথে যাতায়াত করতে হয় তাদের। এসব পথে যানবাহন কিংবা রোগী নিয়ে চলাচল করা বড় বিপদ হয়ে দাঁড়ায়। সেইসঙ্গে শিক্ষার্থীরা, নানা কাজে সাধারন মানুষের আনাগোনা এই সব সড়কে। তাই সড়ক গুলোর স্থায়ী সংস্কার চায় বলে জানায় স্থানীয় বাসন্দিারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলায় এসব সড়কের মধ্যে সুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুর ভায়া আউশকান্দি-ঢাকা আঞ্চলিক সড়কের রানীগঞ্জ ইউনিয়নের নারিকেলতলা থেকে ইছগাঁও স্টিল সেতু পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের ওপর দিয়ে প্রতিদিন সুনামগঞ্জ-ঢাকা সহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে দূরপাল্লার যাত্রী বাস সহ ভাড়ী যানবাহন চলাচল করছে। এদিকে ২২ সালের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের মধ্যে জগন্নাথপুর-বেগমপুর সড়কটি ২০২৪ সালের দুই বারের বন্যায় পানির স্রোতে বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে গেছে। ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কটির ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে সামান্য বৃষ্টির পানিতে গর্তে পানি জমে যায়। বন্যার পড়ে সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় এই সড়ক পথে যানবাহন ও যাত্রীদের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয়।
হাসিমপুর ইউনিয়নের মামুন মিয়া বলেন, সড়ক বেহাল হয়ে আমাদের প্রায় চার কিলোমিটার ঘুরে শিবগঞ্জ বাজারে যেতে হয়। এভাবে চলাচলে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
একই ইউনিয়নের আল আমিন ইসলাম বলেন, রানিগঞ্জ সড়কে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে চলাচলে কষ্ট হচ্ছে। এমনকি শিক্ষার্থীরা সময়মতো বিদ্যালয়ে যেতে পারে না, সেইসঙ্গে গ্রামবাসীর ভোগান্তি।
পাইলপাও ইউনিয়নের কামাল হোসেন বলেন, উপজেলার অনেক গুলো সড়ক বেহালে পরিনত হয়েছে। বড় বড় গর্ত আর বৃষ্টিতে জমে থাকে পানি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী সোহরাব হোসেন জানান, ২২ সালের জুন থেকে ২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত কয়েক ধাপে বন্যায় বিভিন্ন সড়ক ভেঙ্গে যায়। এবং অনেক পাকা সড়কেরও ক্ষতি হয়েছে। ওইসব সড়কের ক্ষয়ক্ষতি নির্ণয়ে কাজ করা হচ্ছে। এই পর্যন্ত উপজেলার ১৯টি সড়কের ৩৭ কিলোমিটার ক্ষতি হয়েছে। সেই ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৮০ কোটি টাকা। এইসব ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের তালিকা প্রস্তুত করে জেলায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়ক গুলো সংস্কার ও মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
"