কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি

  ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সাতক্ষীরার কলারোয়া

টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা বিপর্যস্ত জনজীবন

তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে সাতক্ষীরার কলারোয়ার বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। একইসঙ্গে পর্যাপ্ত ও ভালো ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এমন হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, উপজেলায় গত ১৩ সেপ্টেম্বরে ভোর হতে ১৫ সেপ্টেম্বর দুপুর পর্যন্ত উপজেলায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৫৭ মিলিমিটার।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পৌরসভা ও উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলায় বয়ে যাওয়া বেত্রবতী নদী, পার্শ্ববর্তী কপোতাক্ষ নদ এবং সীমান্তবর্তী ইছামতি নদী ও সোনাই নদীতে পানি টয়টুম্বুর করছে। টানা বৃষ্টির কারণে এ নদীগুলোর তীরবর্তী অনেকের বাড়ির আঙিনা ও ঘরবাড়িতে পানি ওঠে গেছে। উপজেলার শত শত মাছ চাষের ঘের ও পুকুর পানিতে থৈ থৈ করছে। অনেক ঘের-পুকুর পানিতে তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। রাস্তা-ঘাট, বাড়ির আঙিনায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাড়িঘর ও রাস্তা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পর্যাপ্ত ও যুগোপযোগী ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এমনটা হচ্ছে। ঘর থেকে বের হতে না পেরে ও কাজ করতে না পেরে দুর্ভোগে পড়েছেন দিনমজুর, ভ্যানচালক ও শ্রমজীবী খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। ক্ষতি হয়েছে আগাম শীতকালীন সবজি চাষিদেরও।

কলারোয়া বেত্রবতী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রাশেদুল হাসান কামরুল জানান, তার স্কুলের আঙিনা, বারান্দা ও ক্লাসরুম পানিবদ্ধ হয়ে পড়েছে। এমনকি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড মির্জাপুরের বিভিন্ন এলাকা ও রাস্তাঘাট পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেকের বাড়ির আঙিনায় পানি ওঠেছে। তিনি আরো জানান, পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থার চরম বিপর্যয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অধিকাংশ নাগরিক পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। শিক্ষার্থীদের স্কুলের পড়া-লেখা বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। গোটা পৌর এলাকার প্রায় একই চিত্র।

তুলশীডাঙ্গা গ্রামের ভ্যান চালক নাসির জানান, বাড়ি ও আশপাশের রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে। বৃষ্টির কারণে ভ্যান নিয়ে বাইরে বের হয়ে ভাড়া পাওয়াও যাচ্ছে না। প্রতিদিন চাল-তরকারি কিনে সংসার চালাতে হয়। গত তিনদিন ধরে আয় না থাকায় কষ্টে আছেন। দিনমজুর আজিজ জানায়, তিনদিন ধরে ঘরে বসে আছেন। কাজকর্মে যেতে পারছে না। পরিবার নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন।

মাছের ঘের ব্যবসায়ী আব্দুল হক বলেন, অনেকের মাছের ঘের ও পুকুর তলিয়ে গেছে। কেউ কেউ নেট-পাটা দিয়ে মাছ ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। কারো কারো ঘের-পুকুরের আইল সমান পানি থৈ থৈ করছে। চন্দনপুরের

কৃষক মনিরুজ্জামান বলেন, এলাকায় ফসলের খেতে অতিরিক্ত পানি জমে যাওয়ায় আবাদ নষ্ট হচ্ছে।

কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহুরুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে জলাবদ্ধতার খবর শুনতে পেয়েছি। ইতোমধ্যে পৌরসভার প্রকৌশলীকে ড্রেনেজ ব্যবস্থা সচল রাখার তাগিদ দিয়েছি। উপজেলাব্যাপী অচিরেই জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close