শায়েস্তাগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
চুনারুঘাটের শনিবাইর সেতু
বালুবাহী গাড়ির চাপে ভাঙল সেতুর বিম
চা পাতা নিয়ে বিপাকে বাগান কর্তৃপক্ষ * কোনো রকম খুঁটি ও বাঁশের ওপর দাঁড়িয়ে আছে সেতু
হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে দেউন্দি চা বাগান কারখানা সামনে শনিবাইর সেতুর মাঝামাঝি বিম নেই। কারণ সেতুর দুইপাশে পিলার ধ্বসে পড়েছে। দুর্ঘটনার শঙ্কা নিয়ে এর ওপর দিয়ে হাজার হাজার চা শ্রমিক ও যান চলাচল করছে। একইসঙ্গে চাপাতা অনত্র পাঠানো নিয়ে বিপাকে পরেছে বাগান কর্তৃপক্ষ। অতিরিক্ত বালু বোঝাই বিভিন্ন পরিবহন চলাচল কারণে এটি ভেঙে পড়েছে অভিযোগ বাগান কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের।
সূত্রে জানা গেছে, দেউন্দি টি কোম্পানি মালিকানাধীন অধীনে ছিল দেউন্দি চা বাগান থেকে শায়েস্তাগঞ্জ সড়ক এবং চানপুর চা বাগান থেকে শাহজীবাজার পর্যন্ত সড়ক। পরে এ দুটি সড়ক ও সেতু স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) অধীনে সড়ক ও ছোট-বড় সেতু নির্মাণ করে। ২০২২ সালে ওই সেতুটি এলজিইডি মাধ্যমে হালকা কিছু মেরামত করে যেতে না যেতেই এক বছর পরে আবারও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ঝুঁকিপূর্ণ সেতু রক্ষার জন্য দেউন্দি চা বাগানের কর্তৃপক্ষ কিছু দিন পর পর শ্রমিক দিয়ে বালু বস্তা, গাছের কুটি ও বাঁশ দিয়ে এটি আটকিয়ে রাখা হলে ও পাহাড়ি বৃষ্টির ঢলে ও ভারী গাড়ি চাপে সেতু নড়বড়ে হয়ে যায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নে দেউন্দি চা বাগান-লাল চান্দ চা বাগান-শাহজীবাজার এলজিইডি প্রধান সড়কে যান ও পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। শনিবাইর সেতুর মাঝামাঝি বীম নেই। সেতুর দুইপাশে পিলার ধ্বসে পড়েছে। কোনো রকম গাছের খুটি ও বাঁশের ওপর দাড়িয়ে আছে। যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।।
দেউন্দি চা বাগানের ডেপুটি ম্যানেজার (সহকারী ব্যবস্থাপক) দেবাশীষ দাস টিটো জানান, কয়েক বছর ধরে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এই বিপদজনক সেতু দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচলে বাগান কর্তৃপক্ষ সেতুর সামনে লাল নিশান বাঁশ দিয়ে টাঙিয়েছে সতর্ক বাণী। যে কোনো সময় এই সেতু ধ্বসে পড়তে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। ২০১৩ সালে ৩ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে অবগত করে আবেদন করেন এবং এরপরে বেশ কয়েকটি জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী কর্তৃপক্ষের আবেদন করলে ও এখন পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর তদারকি নেই। এতে দেউন্দি চা বাগান ও লাল চান্দ চা বাগানের উৎপাদিত চাপাতা আটকা পড়ছে।
লাল চান্দ চা বাগানের ব্যবস্থাপক মোফাজ্জল হোসেন জানান, বাগানের উৎপাদিত কাঁচা চা-পাতা বাগানের কারখানাতে পরিবহন করতে হয়। বীম ভেঙে পড়ায় এখন কাঁচা চা-পাতা উওোলন করে পরিবহন করে আনা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে চা উৎপাদনের পরিমাণ কমে যাওয়ার পাশাপাশি চায়ের গুণগত মানও কমে যাবে।
স্থানীয় বাগানের চা শ্রমিক নেতা ও সাবেক ইউনিয়স পরিষদ সদস্য কার্তিক বাকতি জানান, বাগানের হাজার হাজার শ্রমিক এলজিইডি দুটি সড়ক দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে থাকি। এবং আমাদের বাগানের কর্মরত অনেকের সন্তান স্কুল- কলেজে চলাচল করে থাকে এ সেতুর ওপর নির্ভর করে।
বাগানের গাড়ি চালক মোহন লাল বলেন, বাগানের শনিবাইর সেতুর ওপর দিয়ে ট্রাক্টর নিয়ে কাঁচা চা-পাতা আনা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এদেিক সেতুর ওপর দিয়ে রাতের আধারে বালুবাহী গাড়ি চলাচল করছে। যেকেনো সময় লোকজন নিয়ে ভেঙে পড়তে পারে।
পাইকপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ওয়াহেদ আলী বলেন, ‘সেতুটি অনতিবিলম্বে দেউন্দি চা বাগান থেকে লাল চান্দ চা বাগানের সড়কে শনিবাইরা সেতু ও অরেকটি আছে বদর গাজী সেতু। দুই সেতুই সংস্কারের দাবি জানাই।’
এদিকে উপজেলা প্রকৌশলী মো. কালাম আহমেদ এর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
"