কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি

  ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

রংপুরের কাউনিয়া

গোলাপি পদ্ম তোলায় সৌন্দর্য হারাচ্ছে ‘বেতানির বিল’

রংপুরের কাউনিয়ায় ‘বেতানি বিলে ফুটেছে হাজারো গোলাপি পদ্ম। বিলের গোলাপি পদ্মের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে আসছে প্রকৃতিপ্রেমীরা। কেউ ঘুরে দেখছে আবার কেউ তুলছে ছবি। স্থানীয় কিছু লোক দেদারছে এই ফুল তুলে বিক্রি করছে। মানছে না কোনো নিয়মণ্ডনীতি। আগত প্রকৃতিপ্রেমীরা এই ফুলের সঙ্গে ছবি তোলার পাশাপাশি তা ছিঁড়েও নিয়ে যাচ্ছে। এতে সৌন্দর্য হারাচ্ছে পদ্মবিল।

স্থানীয়রা মনে করছেন, পদ্মবিলের সৌন্দর্য রক্ষায় এখনই পরিকল্পনা নেওয়া প্রয়োজন। তবে প্রশাসন থেকে বলা হচ্ছে, বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, তাঁদের কাছে এটি ‘বেতানির বিল নামেই পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে বর্ষাকালে এ বিলে গোলাপি রঙের অসংখ্য পদ্মফুল ফোটে। এমনিতে পদ্মফুল সারা বছর থাকে না। বর্ষাকালেই শুধু দেখা যায়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পদ্মফুলেরনএ সৌন্দর্য উপভোগ করতে এলাকার বিভিন্ন বয়সী মানুষ আসছে বিলের ধারে। স্মৃতি রাখতে ছবিও তুলছেন কেউ কেউ। কখনো কখনো তারা ছবি তুলতে এই পদ্মগুলো ছিঁড়ছে এবং সেগুলো সঙ্গে করে নিয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ আবার সে পদ্মগুলোকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে যাচ্ছে। রংপুর থেকে ঘুরতে আসা পদ্মপ্রেমী এনায়েত ও আপন তাদের বান্ধবীদের নিয়ে পদ্ম ফুলের বিল দেখতে এসেছেন। এখানে ঘোরার মতো নৌকা বা অন্য কোন ব্যবস্থা না থাকায় দুর থেকে সৌন্দর্য উপভোগ করে প্রতিটি পদ্ম ফুল ১০ টাকা করে কিনে ফিরে গেলেন নিজ গন্তব্যে।

বেতানি বিলের পদ্মফুল বিক্রেতা শিশু হাসিবুল, বকুল, রফিকুল বলেন, আমরা সারাদিনে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার ফুল বিক্রি করে সংসারের কিছু খরচ করি। আমরা প্রতিফুল পদ্ম ৫-১০ টাকা বিক্রি করি। পরিবেশবাদী সংগঠন-স্নেক রেসকিউ অ্যান্ড ওয়াইল্ড লাইফ অ্যাওয়ার্নেস অর্গানাইজেশন রংপুরের সভাপতি রাকিব আল মীম বলেন, এখানে আসা প্রত্যেক দর্শনার্থী যাওয়ার সময় পদ্মফুল নিয়ে যাচ্ছে। এতে সৌন্দর্য হারাচ্ছে পদ্মবিল। বিক্রির সঙ্গে স্থানীয় কিছু অসাধু লোক জড়িত। এখানে ফুলগুলো সংরক্ষণ করা গেলে ভালো হতো। কাউনিয়া উপজেনা প্রশাসন যেন এই বিলের সৌন্দর্য ও পদ্মফুল রক্ষায় ব্যবস্থা নেয়।

মফিজুল ইসলাম নামের এক দর্শনার্থী বলেন, পদ্মফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে এসেছি। তবে এখানে এসে পদ্মফুল খুব কমই দেখতে পেলাম। কারণ, অনেকেই পদ্মফুল তুলে নিয়ে যাচ্ছে। আরেক পদ্মফুলপ্রেমী শফিকুল ইসলাম বলেন, পদ্মফুল ফোটার সময়ে বিলটা সংরক্ষণ এবং নৌকার ব্যবস্থা করা গেলে দর্শনার্থীরা আরও বেশি সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারত।

কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মহিদুল হক বলেন, কাউনিয়া উপজেলার ‘বেতানি বিলে পদ্ম ফুল ফুটেছে তা শুনেছি। বিলের ফুল তুলে নিয়ে যায় ও বিক্রি করেন অনেকে এমন খবরও শুনেছি। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে বিলের সৌন্দর্য ও পদ্মফুল রক্ষায় বিল সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে। সবার প্রতি আহ্বান তারা যেন ফুল তুলে সৌন্দর্য নষ্ট না করেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close