নারায়ণগঞ্জ ও আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

  ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

রূপগঞ্জ ও আনোয়ারা

বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষ ভাঙচুর-লুট, আহত ১৫

রূপগঞ্জে পোস্টার ছেঁড়া কেন্দ্র করে স্বেচ্ছাসেবক দল ও যুবদলের মধ্যে সংঘর্ষ * আনোয়ারার বিএনপির দুটি পক্ষের সংঘর্ষে একই পরিবারের ৯ জনসহ আহত ১৫

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পোস্টার ছেঁড়া কেন্দ্র করে বিএনপি দুটি পক্ষের নেতাকর্মীর সংঘর্ষ হয়েছে। এ লাঠি সোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, প্রতিপক্ষের বাড়িঘর ও গাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। গত শুক্রবার রাতে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ইছাখালী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

এদিকে চট্টগ্রামের আনোয়ারার বিএনপির দুটি পক্ষের সংঘর্ষে একই পরিবারের ৯ জনসহ ১৫ নারী-পুরুষ আহত হয়েছেন। এ সময় বিএনপির খলিলুর রহমান নামে এক কর্মীর বসতঘরের হামলা ও লুটপাটের অভিযোগও তুলেন ভুক্তভোগী পরিবারটি। গত শুক্রবার বিকেলে উপজেলার বরুমছড়া ইউনিয়নের জায়ত্তেশর মেম্বারের বাড়িতে এঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রের বরাদ দিয়ে নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, রূপগঞ্জে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব আলী আহমেদ কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুজ্জামান মনিরের পক্ষে। এছাড়া উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব বাবুল মিয়া কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মুস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দীপুর পক্ষ হয়ে। বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে দুই পক্ষের নেতাকর্মীরাই আলাদাভাবে তাদের নেতার ছবি সম্বলিত দলীয় পোস্টার বিভিন্ন স্থানে লাগান। 

শুক্রবার রাত ৯টার দিকে লাগানো ওই পোস্টার ছিঁড়াকে কেন্দ্র করে তাদের লোকজনের বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের লোকজন লাঠি সোটা ও ধারালো অস্ত্রশস্ত্রসজ্জিত হয়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া করে। এ সময় উভয় পক্ষের লোকজন একপক্ষ আরেক পক্ষের বাড়ি ঘরে ও গাড়িতে হামলা ভাঙচুর, লুটপাটসহ অগ্নিসংযোগ করে।

উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব আলী আহমেদ বলেন, উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিবের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা তাদের একটি অফিসে ভাঙচুর চালায়। এ সময় তার একটি প্রাইভেট কারও ভাঙচুর ও এটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। 

তবে উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব বাবুল মিয়া বলেন, ‘ কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের লাগানো পোস্টার ছিড়ে ফেলে স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিবের লোকজন। প্রতিবাদ করায় সন্ত্রাসীরা আমাদের উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক কামরুল হাসানের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট চালায়। তার বাসায় থাকা স্বর্ণালংকার ও মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে তারা।’

উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাহফুজুর রহমান হুমায়ুন বলেন, ‘দলের ভেতর কিছু অনুপ্রবেশকারী ও দুষ্কৃতির দলের এসব ঘটনা ঘটছে। এ ব্যাপারে  দলীয় ভাবে আমরা তদন্ত করে বিষয়টি দেখব।’

জানতে চাইলে রূপগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জুবায়ের হোসেন বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’

এদিকে আনোয়ারা প্রতিনিধি জানান, উপজেলার বরুমছড়া ইউনিয়নে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে একই পরিবারের খলিলুর রহমানের স্ত্রী নুর বেগম (৩৫), ছেলে মো. মোজাম্মেল হক (২৪), মিনু আকতার (৩০), সেলি আকতার (৩৫), হোসনে আরা বেগম (৪৫), আনঞ্জুমান আরা বেগম (৬০), নবী হোসেনের মেয়ে হিরা আকতার (১৬), গুরা মিয়া (৩০), জসিম উদ্দিন (৩৫) গুরুতর আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয়রা। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ভুক্তভোগী খলিলুর রহমান জানান, ‘হামলাকারীরা বসতঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, নগদ ৪ লাখ টাকাসহ ২ ভরি স্বর্ণংকার লুট করে নিয়ে যায়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিনের ভাই বিএনপি নেতা মনজুর উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে ইউনুস, আহমদ নূরসহ অন্যরা মিছিল নিয়ে এ হামলা চালিয়েছে। আমার ঘরের নারীসহ ৯ জন আহত হয়েছে। পরে স্থানীয়রা ধাওয়া করলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা।’

অপরপক্ষে আহমদ নূর বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে তারা হামলা করেছে। এতে আমাদের দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসহ ৬ জন নেতাকর্মী আহত হয়।’

আনোয়ারা থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বরুমছড়া এলাকায় বিএনপির দুই গ্রুপের মারামারির ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখনও পর্যন্ত কোনো পক্ষ অভিযোগ বা মামলা করেনি। অভিযোগ বা মামলা হলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close