গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি

  ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

গুরুদাসপুরে এক পদে চাকরি করছেন দুজন

নাটোরের গুরুদাসপুর পৌরসদরের চাঁচকৈড় নাজিম উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে চাকরি করছেন দুজন। জটিলতা তৈরি হওয়ায় অস্তিত্ব সংকটে পড়েছেন ২০০৫ সালে নিয়োগ পাওয়া আলেয়া খাতুন।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১২টায় আলেয়া বেগম সংবাদ সম্মেলন করে ন্যায়বিচার দাবি করেন।

বিদ্যালয় সূত্র জানিয়েছে, ১৯৪১ সালে প্রতিষ্ঠিত চাঁচকৈড় নাজিম উদ্দিন স্কুলে ২০০৫ সালে কলেজ শাখা চালু করা হয়। কলেজ শাখায় ওই বছরের ১৩ মার্চ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে বিভিন্ন পদে অন্তত ৩৬ জন শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ করা হয়। এরমধ্যে ১৯৯৫ সালের নিয়োগ বিধি অনুযায়ী সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে স্থানীয় আলেয়া খাতুন নামের এক নারীকে নিয়োগ দেয় তৎকালিন পরিচালনা পর্ষদ। অথচ আলেয়া খাতুনের নিয়োগ বহাল রেখেই ১৪ বছর পর একই পদে ২০১৯ সালের ২৫ অক্টোবর তাসলিমা খাতুন নামের আরেক নারীকে নিয়োগ দেন কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকে এক পদে দুই ব্যক্তিই হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শিক্ষক বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন প্রতিষ্ঠানটির সভাপতির দায়িত্বে আসেন। সেসময় নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে তার মামা রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজের প্রভাষক জয়নাল আবেদীনকে নাজিম স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের চেয়ারে বসান। মূলত সেসময় মোটা অঙ্কের উৎকোচের বিনিময়ে একই পদে তাসলিমা খাতুনকে নিয়োগ দিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেন।

ভুক্তভোগী আলেয়া খাতুন জানান, দীর্ঘ দিন ধরে তিনি বিনা বেতনে সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। অথচ আওয়ামী লীগের দাপটে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ও সাবেক অধ্যক্ষ জয়নাল আবেদীন একই পদে অন্য একজনকে অবৈধভাবে নিয়োগ দেন। তবে তাসলিমা খাতুনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম আক্তার বলেন, সহকারী গ্রন্থাগারিকের পদে দুজনকে নিয়োগ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

নাজিম উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. জালাল উদ্দিন শুক্তি বলেন, আলেয়া বেগম ২০০৫ সালে নিয়োগের পর থেকে নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। একই পদে ২০১৯ সালে নিয়োগ পাওয়া তাসলিমা খাতুনও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করছেন। বিষয়টি নিয়ে তারা বিব্রত।

তৎকালীন অধ্যক্ষ জয়নাল আবেদীন বলেন, সহকারী গ্রন্থাগারিকের পদ ফাঁকা থাকায় সেখানে তাসলিমা নামের এক নারীকে নিয়োগ দিয়েছিলেন তিনি। একই পদে আগে দেওয়া নিয়োগের কথা তিনি জানতেন না।

পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, তার (আলেয়া খাতুন) নিয়োগপত্রে ত্রুটি থাকায় অন্য একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

নাজিম উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তার বলেন, একই পদে দুই ব্যক্তির চাকরি করার সুযোগ নেই। নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close