কুমিল্লা প্রতিনিধি

  ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বন্যার প্রভাব

কুমিল্লায় সড়কে ক্ষতি ৩০৯ কোটি টাকা

কুমিল্লার গ্রামগুলোতে বন্যার পানি কমতে শুরু হওয়ায় সড়কগুলোতে দেখা দিচ্ছে ক্ষতচিহ্ন ও ধ্বংসস্তূপ। জেলা জুড়ে ৩০৯ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে

গেলো কয়েকদিনে ভারী বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ও উজান থেকে ভারতীয় পানি বেশি না আসার ফলে কুমিল্লার বন্যা পরিস্থিতি আরো উন্নতি হচ্ছে। এদিকে বন্যায় জেলাজুড়ে ৬৫ হাজার হেক্টর ফসলি জমি পানি নিচে প্লাবিত হয়েছে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, এদিকে গোমতী নদীর পানি স্বাভাবিক উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। ওই নদীর বুরবুড়িয়ায় বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে পানি বের হওয়া দিন দিন আরো কমে আসছে। এর ফলে বুড়িচং ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার লোকালয়ে পানি কমে বন্যা পরিস্থিতি অনেকটা উন্নতি হয়েছে। এদিকে গ্রামগুলোতে বন্যার পানি সরে যাওয়ায় দেখা দিচ্ছে ক্ষতচিহ্ন ও ধ্বংসস্তূপ। ভেসে ওঠেছে ভাঙাচোরা সড়কগুলো। এছাড়া যে এলাকাগুলোতে এখনো পানি আছে সেখানে বাড়িঘরগুলোতে এখনো তালা ঝুলছে। এখানকার মানুষগুলো এখনো আশ্রয় কেন্দ্র এবং আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বন্যায় প্লাবিত কুমিল্লা জেলার দক্ষিনাঞ্চল লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, চৌদ্দগ্রাম, নাঙ্গলকোট উপজেলায় বন্যা পানি কমে দিন দিন পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।

জেলা প্রশাসনের হিসেব মতে, জেলায় ১০ লাখ ৭৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি আছে। ৭২৪টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৭৮ হাজারেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। ২২৫টি মেডিকেল দল এদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। জেলা প্রশাসন থেকে ৩৯ লাখ নগদ টাকা ও ৮০০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জেলায় এক হাজার ৬০০ মেট্রিকটন চল নদগ ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ পর্যন্ত কুমিল্লায় বন্যার পানিতে ডুবে ২১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে বন্যাকবলিত লোকজন জানান, শুধু এই মুহূর্তেই নয় বন্যাপরবর্তী সময়ে তাদের পুনর্বাসন সহায়তায় ও যেন সরকারের পাশাপাশি দেশের বৃত্তবানরা যেন এগিয়ে আসেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আইয়ূব মাহমুদ জানান, বন্যায় জেলাজুড়ে ৬৫ হাজার হেক্টর ফসলি জমি পানি নিচে প্লাবিত হয়েছে। যেহেতু এখনো অনেক এলাকায় পানি ঢুকছে সেহেতু ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে। বন্যার পানি কমার পর সঠিক তথ্য জানা যাবে কি পরিমাণ ফসলি জমি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বেলাল আহমেদ জানান, জেলাজুড়ে বন্যাকবলিত এলাকায় প্রায় ৪০০ কোটি টাকার মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা চন্দন কুমার পোদ্দার জানান, প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি জেলাজুড়ে ৩০৯ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানি কমলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কুমিল্লা নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সায়েদুজ্জামান ছাদেক জানান, বন্যার কারণে কুমিল্লায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার পরিমাণ ৯১৮ কিলোমিটার, মেরামত করা রাস্তার পরিমাণ ২৫ কিলোমিটার, ক্ষতিগ্রস্ত ব্রিজ কালভার্টের সংখ্যা ২৭টি। ঠিক এই মুহূর্তে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কিংবা কত টাকার ক্ষতি হয়েছে তা বলা যাচ্ছে না। বন্যার পানি সম্পূর্ণ সরে যাওয়ার পর বলা যাবে বলেও জানান তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close