ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
ফুলবাড়ীতে ধান চাষ
অনাবৃষ্টিতে ধানখেতে বেড়েছে রোগবালাই, আবাদ নিয়ে শঙ্কা
অনাবৃষ্টিতে খেতে সেচ দিয়ে পরিচর্যার পরামর্শ কৃষি কর্মকর্তার
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে অনাবৃষ্টির কারণে টানা সেচ দিতে চাষাবাদে ব্যয় যেমন বাড়ছে পাশাপাশি ধানখেতে দেখা দিয়েছে রোগবালাই। ফলে আমনের আবাদ নিয়ে চিন্তিত কৃষকরা। শ্রাবণের অনাবৃষ্টি ভাদ্রের মাঝামাঝি সময়ে এসেও অব্যাহত রয়েছে। চলতি মৌসুমে জমিতে রোপা আমনের চারা রোপনের পর টানা খরায় আমন আবাদে ধকল যাচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বেশিরভাগ কৃষক শ্রাবণের মাঝামাঝি সময়ে জমিতে রোপা আমন ধানের চারা রোপণ করেছেন।
কৃষকরা জানান, জমিতে চারা রোপনের সময়ই দেখা দিয়েছিল খরা। খরায় খরায় কেটে গেছে শ্রাবণ। ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি সময়েও বৃষ্টি নেই। এদিকে জমিতে সার ও নিড়ানি দেওয়ার সময় হয়েছে। বাধ্য হয়ে জমিতে সেচ দিয়ে সার ছিটিয়ে নিড়ানি দিতে হচ্ছে। এর মধ্যে আবার ধানখেতে দেখা দিয়েছে নানা রোগবালাই। কাঙ্ক্ষিত ফলন নিয়ে শঙ্কিত বলে জানান কৃষকরা।
উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব ধনিরাম গ্রামের কৃষক শাহজাহান আলী জানান, তিনি জমিতে চারা রোপন করছেন এক মাস হয়েছে। চারা রোপনের পর খেতের পানি শুকিয়ে যায়। ফসল বাঁচাতে জমিতে টানা সেচ দিয়ে আসছেন। অন্যান্য বছর বৃষ্টির পানিতে রোপা আমনের আবাদ করতে পারলেও এবারে বৈদ্যুতিক সেচ পাম্পের পানিতে আবাদ করতে হচ্ছে তাকে। ফলে আবাদে ব্যয় বেড়েছে তার।
একই এলাকার আমিনুল ইসলাম বলেন, তিনি দুই বিঘা জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছেন। খরার কারণে তার ধানখেতে খোল পঁচা রোগ দেখা দিয়েছে। ধানখেতে স্প্রে করার জন্য এক হাজার টাকার ঔষধ কিনেছেন।
শাহ বাজার এলাকার কৃষক ফরিদ উদ্দিন জানান, ধানের খেতে ছত্রাক জনিত রোগের কারণে সবুজ খেত দিনে দিনে বাদামি হয়ে যাচ্ছে।
ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম, ধানখেত রোগবালাই মুক্ত করতে জমিতে বালাইনাশক স্প্রে করতে হচ্ছে। মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হলে ধানখেতে এতো রোগবালাই হতো না বলে জানান তারা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন জানান, উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১১ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। চাষের লক্ষ্যমাত্রা পুরোপুরি অর্জিত হয়েছে। অনাবৃষ্টির কারণে খেতে সেচ দিয়ে পরিচর্যা করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ধানখেতের রোগবালাই দমনে কৃষকদের পরামর্শ দিতে মাঠ পর্যায়ে আমাদের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
"