সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

  ০১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বিআরডিবির উদ্যোগ

সিরাজগঞ্জে সুদিন ফিরেছে শীতলপাটির যাচ্ছে বিদেশেও

সিরাজগঞ্জে উৎপাদিত শীতল পাটি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন পাটি কারিগররা। পূর্বে পূজির অভাবে এই শিল্প হারিয়ে যেতে বসলেও বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের সাহায়তায় আবারও সুদিন ফিরছে। সিরাজগঞ্জের উৎপাদিত শীতল পাটি দেশের চাহিদা পূরণ করেও বিদেশেও যাচ্ছে।

জানা যায়, জেলার কামারখন্দ, রায়গঞ্জ ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় শীতল পাটি তৈরি হয়। গরমে প্রশান্তির পরশ পেতে শীতল পাটির জুড়ি নেই। গরমের সময়ে কদর বাড়ে এখানে উৎপাদিত শীতল পাটির। শীত শেষের সঙ্গে সঙ্গে কারিগরেরা শীতল পাটি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন পাটি কারিগররা। গরমের কয়েক মাস শীতল পাটির কদর বাড়ে। তাই কাজের ব্যস্ততাও অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেড়ে যায় কয়েকগুন। আরো জানা গেছে, বর্তমানে কামারখন্দ উপজেলার চাদপুর গ্রামের অধিকাংশ পরিবার এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত। এখানে শীতল পাটি, নামাজের পাটি ও আসন পাটি নামে তিন ধরনের পাটি তৈরি করা হয়। কিন্তু বেতের মূল্য বৃদ্ধি, শ্রমিকের মুজুরী, পাশাপাশি পুজির অভাবে এই শিল্প হারিয়ে যেতে বসেছে। বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড থেকে তাদের ঋণ সহায়তা প্রদান করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

পাটিশিল্পের কারিগররা জানান, কামারখন্দ উপজেলার চাদপুর গ্রামের মানুষ শীতল পাটি বুনে তাদের ঐতিহ্য টিকিয়ে রেখেছেন। তীব্র তাপেও খুব গরম হয় না বলেই এই পাটিকে শীতল পাটি বলা হয়।

দুলাল চন্দ্র ভৌমিক বলেন, ছোট বেলা থেকে তৈরি করে আসছেন এ শীতল পাটি। পাটি তাদের পারিবারিক ঐতিহ্য। বাবা দাদারা পাটি বুনতেন। তাদের দেখে এ পেশায় জড়ান। এখনও তাদের শীতল পাটির কদর পুরো দেশ জুড়ে রয়েছে।

চাদপুর শ্রীমতি মলী রানী বলেন, ছোটবেলা থেকে পাটি বুনে আসছি। একজন মেয়ে সপ্তাহে একটি পাটি বুনা যায় এর এতে মুজুরি আসে ৬০০-৭০০ টাকা। সরকারী ভাবে প্রয়োজনীয় সহযোগীতা করা হলে এ শিল্প টিকে থাকবে।

পাটি শিল্প সমিতির সাধারন সম্পাদক বিল্লু চন্দ্র দাস জানান, এই শিল্প আজ পুজির অভাবে হারিয়ে যেতে বসলেও বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড থেকে যে সহায়তা প্রদান করা হয় তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। অনেকে এই পেশা বাদ দিয়ে অন্য পেশায় চলে গেছে। এ অবস্থায় সরকারী উদ্দ্যোগ না নিলে এই শিল্প বাঁচিয়ে রাখা কঠিন হবে।

কামারখন্দ উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, এই শিল্পকে টিকে রাখার জন্য কারিগরদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। পূর্বে একটি শীতল পাটি ১ থেকে দেড় হাজার টাকা বিক্রি হলেও প্রশিক্ষণ প্রাপ্তির পর উন্নত ও সুন্দর শীতল পাটি তৈরি করে এখন ৩ থেকে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করে কারিগরেরা। বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের করোনা কালীন প্রণোদনা ঋণ হিসেবে ২৯ লাখ টাকা সহায়তা প্রদান করা হয়। ফলে এই শিপ্লের সুদিন এবং কারিগরদের কর্মসংস্থান আরও বৃদ্ধি পাবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close