দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
মায়ের পর প্রতিপক্ষের হামলায় আহত আ.লীগ কর্মীর মৃত্যু
রাজশাহীর দুর্গাপুরে প্রতিপক্ষের মারধরে আহত আওয়ামী লীগ কর্মী সোবাহান আলী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মৃত্যু পর ময়নাতদন্ত শেষে গত মঙ্গলবার রাতে সামাজিক কবরাস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এর আগে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের এক দিন পরে ৭ আগস্ট সোবাহান আলী, তার স্ত্রী ও ছেলের ওপর হামলা করে প্রতিপক্ষ। এতে গুরুতর আহত সোবাহান মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
সোবাহান আলী দুর্গাপুর উপজেলার ধরমপুর চকপাড়া গ্রামের মৃত খিতো মোল্লার সন্তান। প্রতিপক্ষের লোকজনে তার মাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলার বাদী ছিলেন তিনি। তার পরিবারে সদস্যদের অভিযোগ, দেশে উদ্ভূত পরিস্থিতিকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে ওই মামলার আসামি পক্ষের লোকজনই হামলা চালিয়ে তাকে আহত করে। সোবাহান আলী আওয়ামী লীগের সক্রীয় কর্মী ছিলেন বলে জানান পানানগর ইউনিয়নের এক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর আলী।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব বিরোধের জেরে ২০১৬ সালে সোবাহান আলীর পরিবারের ওপর হামলা করে একই গ্রামের মৃত মুলব মোল্লার পরিবারের লোকজন। এ সময় মুলব মোল্লার ছেলে মকছেদ আলী, রহিদুল ইসলাম, তরিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী আছিয়া বেগম দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা ও মারধরে সোবাহান আলীর মা অপিয়া বেগম মারা যান। এ ঘটনায় রাজশাহী আদালতে হত্যার অভিযোগে মামলা করেন সোবাহান আলী। পরে মামলাটি তুলে নিতে স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মীদের মাধ্যমে অনুরোধ করেন প্রতিপক্ষ। এতে সোবাহান রাজি হননি। মামলাটি বর্তমানে রাজশাহী আমলী আদালতে বিচারাধীন।
সোবাহান আলীর ছেলে মিনহাজ জানান, দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের এক দিন পরে ৭ আগস্ট স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের নির্দেশে প্রতিপক্ষের মকছেদ আলী, রহিদুল ইসলাম, তরিকুল ইসলাম ও স্ত্রী আছিয়া বেগম হাসুয়া আবারও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সোবাহানের পরিবারের ওপর হামলা করে। এ সময় সোবাহান আলী (৪৬), তার স্ত্রী মিনা বেগম (৪২) ও ছেলে মিনহাজকে (২৩) কুপিয়ে চলে যায়। পরে তাদের প্রথমে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে স্থানীয় এলাকাবাসী।
মিনহাজ আরো বলেন, ‘একই ব্যক্তিরা আক্রমণ করে আমার দাদী ও বাবাকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় আমার মা মিনা বেগম বাদী হয়ে হত্যা মামলা করবেন। আমি প্রশাসনের নিকট আমার দাদী ও বাবাকে হত্যাকারীর সর্ব্বোচ শাস্তি দাবি করছি।’
দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘সোবহান আলীর মৃত্যু খবর শুনেছি। আহতরা রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন থাকায় থানা-পুলিশের পক্ষ থেকে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। তবে এঘটনায় দুর্গাপুর থানায় মামলা করতে এলে মামলা গ্রহন করা হবে।’
"