এম এ লিতু, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ)
কালীগঞ্জ
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে নেই গতিরোধক, ঘটছে দুর্ঘটনা
দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ যানবাহনের দ্রুতগতি * গতিরোধক করে দেওয়ার আশ্বাস পৌর মেয়রের
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা শহরের বিভিন্ন প্রাথমিকের সামনে গতি রোধক না থাকায় দ্রুতগামীর যানবাহনের ধাক্কায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে প্রাথমিক বিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা আহত হচ্ছেন। উপজেলার পূর্বাঞ্চল থেকে কালীগঞ্জ শহরে প্রবেশের অন্যতম ফয়লা সড়ক। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কয়েকশ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে। আর এ সড়কের পাশেই শহরের বৃহৎ প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কালীগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয় (বোর্ড স্কুল)।
সম্প্রতি এ বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী আদরিয়ান আহমেদ আজমাইনকে দ্রুত গতির ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক সাজোরে ধাক্কা দেয়। রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে আদরিয়ান। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পিলেক্সে নিলে ডাক্তার জানায়, তার বাম পায়ের হাড় ভেঙেছে। এরপর থেকে আজ অব্দি পা ব্যান্ডেজ করে সে নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আদরিয়ান ফয়লা গ্রামের ফররুখ আহমেদ ও তানিয়া সুলতানা দম্পতির কনিষ্ঠ সন্তান। প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী আদরিয়ানের দুর্ঘটনাকবলিত হওয়ার ঘটনাটি একটি মাত্র ঘটনা নয়। প্রতিনিয়তই এই সড়কে দ্রুত গতিতে চলা যানবাহনের কারণে ঘটছে ছোট বড় অসংখ্য দুর্ঘটনা। ব্যস্ততম এ সড়কের পাশে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ সলিমুননিছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, মোবারক আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আবু বক্কর বিশ্বাস মোকসেদ আলী আলিম মাদ্রাসা ও শহীদ নূর আলী ডিগ্রি কলেজ রয়েছে। একগুচ্ছ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শহরের এ ব্যস্ত সড়কের পাশে থাকলেও এ সড়কে কোনো গতি নিরোধক ব্যবস্থা না থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে রয়েছে ক্ষোভ।
স্থানীয় বাসিন্দা রাজিব আহমেদ জানান, হাসপাতাল সড়কে বিশেষ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই এখানে প্রতিনিয়তই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে। আর এই দুর্ঘটনাগুলো ঘটার অন্যতম কারণ হলো যানবাহনের দ্রুত গতি। আর এ সড়কে যানবাহনের দ্রুত গতি রোধ করা না গেলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার শঙ্কাও রয়েছে। কর্তৃপক্ষের দ্রুত সড়কটিতে গতিরোধক নির্মাণ করা উচিত।
কালীগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (বোর্ড স্কুল) প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে হাসপাতাল সড়কটি ব্যবহার করে স্কুলে যাওয়া আসা করে। দুর্ঘটনা এড়াতে সড়কটিতে দ্রুত স্পিড ব্রেকার (গতিরোধক) নির্মাণের কোনো বিকল্প নেই। ইতোপূর্বে ব্যাপারটি আমি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে অবগত করলেও কোনো সুফল পাইনি। শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত সড়কটিতে গতিরোধক বা স্পিড ব্রেকার দেওয়ার দাবি জানাই।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত জাহান বলেন, ব্যাপারটা আপনার কাছ থেকে জানলাম। আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখব কী করা যায়।
কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ বলেন, হাসপাতাল সড়কটি শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। সড়কের সঙ্গে বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। সড়কে চলাচলকারী শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি এবং দুর্ঘটনার ব্যাপারে আমি অবগত নই। আমি খোঁজখবর নিয়ে ওই সড়কটির শিক্ষার্থীসহ জনগণের নিরাপদ চলাচলের জন্য গতিরোধক নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখলে, তা অবশ্যই করে দেবো।
"