রাজশাহী ব্যুরো

  ০৬ আগস্ট, ২০২৪

রণক্ষেত্র রাজশাহী, গুলিবিদ্ধ প্রায় অর্ধশত, নিহত ১

রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়ে পুলিশের সহায়তায় এলাকা ছাড়েন মেয়র লিটন

দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে রাজপথে থাকার ঘোষণা দেওয়ার মাত্র প্রায় তিন ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশের সহায়তায় এলাকা ছাড়েন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। দলের প্রভাবশালী অন্যতম নেতা সিটি মেয়র লিটন হঠাৎ করেই কোথাই গায়েব হয়ে গেলো তা গতকাল সোমবার রাত ৮টার দিকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জানা যায়নি।

সোমবার দুপুরেও মহানগর আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে আয়োজিত দলটির সহযোগী সব সংগঠনের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন মেয়র লিটন। তিনি বলেন- ‘আপনাদের কোনো ভয় নাই, সরকার বিরোধী আন্দোলনকারীদের যতক্ষণ দমন করতে না পারব ততক্ষণ জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় আমরা রাজপথ ছাড়বো না।’

সে সময় প্রকাশ্যেই আওয়ামী লীগের অস্ত্রধারী ক্যাডারদের গ্রেপ্তার না করে তাদের নিরাপত্তা দিচ্ছিলেন পুলিশ প্রশাসন। এ সময় নিরাপত্তা দেওয়া পুলিশের একাধিক সদস্য এই প্রতিবেদকের কাছে নিজের পোষাকের অবমাননা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পুলিশ সদস্যরা বলেন, তাদের অসৎ কিছু কর্মকর্তার কারণে পুলিশ বাহিনীর বদনাম হচ্ছে, তাদের ওপর আন্দোলনকারীরা ক্ষিপ্ত হচ্ছে।

এক পুলিশ সদস্য বলেন, ‘প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালালেও তাদের গ্রেপ্তার করার বিপরীতে আমরা সহযোগিতা করছি। যে কারণেই পুলিশ বাহিনীর প্রতি এবার দেশবাসীর আস্থা একেবারেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। আর এমন ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে পরিস্থিতি যে কোন মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।’

এক পর্যায়ে মুখোমুখি সরকারবিরোধী হাজার হাজার শ্রেনী পেশার মানুষ। যে জনশ্রতের সামনে পড়লে আর রক্ষা নেই বলেই কিছুক্ষণ আগে দলটির নেতাকর্মীদেরকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভুলে পুলিশের সহযোগিতায় পলায়ন করেন রাসিক মেয়র লিটন। এরপরই রাজপথে থাকা দলটির নেতাকর্মীরা লিটনের প্রকৃত রূপ দেখলেন। যেন মুহূর্তের মধ্যেই সারা দেশের মতো পাল্টে গেলো রাজশাহী নগরীর দৃশ্যপট। শুরু হয় ত্রিমুখী সংঘর্ষ। যে সংঘর্ষের একটি পক্ষ আওয়ামী নেতা-কর্মী ও পুলিশ এবং অপর পক্ষ সরকারবিরোধী জনশ্রোত।

নগরীর তালাইমারি ও আলুপট্টিসহ বিভিন্নস্থানে আওয়ামী নেতাকর্মী ও পুলিশের সঙ্গে সরকারবিরোধীদের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনার খবর আসতে থাকে। যে সংঘর্ষে সাকিব আঞ্জুম নামে একজন নিহত ছাড়াও প্রায় অর্ধশত ব্যক্তি গুলিবিদ্ধসহ শতাধিক আহতের খবর পাওয়া যায়। রাজপথ পুরোপুরি দখলে নেয় সরকারবিরোধীরা। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় প্রায় ৩০ জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ প্রতিবেদন লেখার সময় নগরীসহ রাজশাহীর বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ ও দলটির সহযোগি সংগঠনের ব্যানারে থাকা এমপিদের অফিস, বাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গেছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close