নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি

  ০৫ আগস্ট, ২০২৪

নন্দীগ্রামে অভিযোগ

একাদশ শ্রেণির ভর্তিতে অতিরিক্ত ফি নিচ্ছেন অধ্যক্ষ

ভর্তি ফি সাধারণ শাখায় ১৫০০ টাকার বদলে ২ হাজার ও কারিগরি শাখায় ১ হাজার টাকার বদলে নেওয়া হচ্ছে ২ হাজার টাকা * কলেজ ড্রেসবাবদ টাকা গ্রহণ করে শিক্ষার্থীদের পাঠানো হচ্ছে নির্ধারিত টেইলাসে

মনসুর হোসেন ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণির ভর্তিতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে রসিদের মাধ্যমে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ ওঠেছে। শিক্ষা বিভাগের নীতিমালা তোয়াক্কা না করে কলেজে নোটিশ টাঙিয়ে প্রকাশ্যেই অনিয়ম করছেন কলেজের অধ্যক্ষ। এমনকি কলেজ ড্রেস বাবদ টাকা গ্রহণ করে শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত টেইলার্সে পাঠানো হচ্ছে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

এতে অতিরিক্ত ভর্তি ফি দিতে হিমশিম খাচ্ছেন শিক্ষার্থীদের দরিদ্র অভিভাবকরা অভিযোগ তাদের।

সরেজিমিনে গতকাল কলেজে গিয়ে নানা অজুহাতে নিয়মবহির্ভূত ভর্তি ফি ২ হাজার টাকার নোটিশ টাঙানো থাকতে দেখা যায়। মনসুর হোসেন ডিগ্রি কলেজ অধ্যক্ষ মাহবুবুর রশীদ স্বাক্ষরিত নোটিশে বোর্ড নির্ধারিত ফি ১৫০০ টাকা, উন্নয়ন ফি ৩০০ টাকা, রেড ক্রিসেন্ট ফি ৪০ টাকা, ভর্তি ফরম ১০০ টাকা, বার্ষিক ক্রীড়া মঞ্জুরী ফি ৩০ টাকা ও বিবিধ ৩০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। তবে নীতিমালার সঙ্গে এই ফি আদায়ের কোনো মিল নেই। সকল চার্জসহ ভর্তি ফি ব্যাপারে শিক্ষা বিভাগ স্পষ্ট নীতিমালা দিলেও তোয়াক্কা করেননি কলেজ অধ্যক্ষ।

সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব স্বাক্ষরিত গত ১৫ মে একটি নীতিমালায় বলা হয়, একাদশ শ্রেণির ভর্তিতে নীতিমালার কোনোরূপ ব্যত্যয় ঘটানো হলে বেসরকারি কলেজ/সমমানের প্রতিষ্ঠানের পাঠদানের ক্ষেত্রে অনুমতি বা স্বীকৃতি বাতিলসহ কলেজটির এমপিওভুক্তি বাতিল করা হবে এবং প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গত ২৬ মে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব আনিসুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ভর্তি নীতিমালা অনুমোদন চিঠিতে বলা হয়, মফস্বল/পৌর (উপজেলা) এলাকায় সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি সর্বসাকুল্যে এক হাজার টাকার বেশি হবে না। অন্য একটি চিঠিতে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে মানবিক, বিজ্ঞান ও বাণিজ্য বিভাগের একাদশ শ্রেণির ভর্তিতে বাংলা-ইংরেজি ভার্সনে এক হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারিত করা হয়েছে।

ভর্তি হওয়া এক শিক্ষার্থী জানায়, মানবিক বিভাগে ভর্তির জন্য কলেজের রসিদের মাধ্যমে ২ হাজার টাকা জমা দিয়েছি। বাধ্যতামূলক সকল শিক্ষার্থীকে অতিরিক্ত ফি দিতে হচ্ছে।

কারিগরি শাখায় ভর্তি হওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, তাদের কাছ থেকেও কলেজের রসিদের মাধ্যমে ২ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া কলেজ ড্রেস (প্যান্ট-শার্ট) বাবদ ১২০০ টাকা জমা নিয়ে অধ্যক্ষ তার নির্ধারিত টেইলার্সে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। সেখানে কাপড়ের মান ভালো না।

কয়েকজন নারী শিক্ষার্থী জানায়, বোরকা অথবা স্যালোয়ার কামিজ বাবদ ৯৫০ টাকা নিচ্ছেন কলেজের অধ্যক্ষ। যারা বোরকা নিচ্ছে তাদের হিজাব দেওয়া হচ্ছে না। খুবই নিম্নমানের কাপড় দিয়ে অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে।

মনসুর হোসেন ডিগ্রি কলেজ অধ্যক্ষ মাহবুবুর রশীদ এ ব্যাপারে বলেন, সব বিভাগে ভর্তি ফি ও সেশন চার্জসহ কয়েকটি খাত মিলিয়ে রসিদের মাধ্যমে ২ হাজার টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। ভর্তি শিক্ষার্থীর সংখ্যা খুবই কম। এরমধ্যে তদবিরে ভর্তি সবচেয়ে বেশি। সব শিক্ষার্থী এক হাজার টাকা করে ভর্তি নেওয়া সম্ভব না। কারিগরি শাখার ভর্তি ফি নীতিমালা এখনো হাতে পাইনি। কলেজ ড্রেস বিষয়ে অধ্যক্ষ মন্তব্য করতে রাজি হননি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close