চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
চিলমারীতে অনুদানের টাকা ভাগাভাগি ইউপি সদস্যের
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে বন্যার পানিতে পানিবন্দি কিশোরীদের জন্য দেওয়া অনুদানের টাকা ভাগাভাগি করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। ওই ইউপি সদস্য তার এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে সুবিধাভোগী কিশোরীদের কাছ থেকে এসব টাকা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল নয়ারহাট ইউনিয়নে।
জানা গেছে, চলমান বন্যায় পানিবন্দি পরিবারের কিশোরীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য গত রবিবার জন প্রতি ২ হাজার ৫০০ টাকা বিতরণ করে সিডবি¬উএফডি নামের একটি সংগঠন। টাকা বিতরণের সময় সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়রা জানায়, এলাকার হালিমা খাতুন নামে এক ছাত্রীর সহায়তায় ইউপি সদস্য আব্দুল সাত্তারের বাড়িতে এসব টাকা লেনদেন করা হয়। অনুদানের টাকা দেওয়ার সময় স্থানীয় শওকত আলী নামে যুবকের সহায়তায় ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড সদস্য আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে জন প্রতি ১ হাজার টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ওই এলাকার সুবিধাভোগী কিশোরী আইরিন আক্তার, মুনতাহা খাতুন ও লিলি খাতুনসহ অনেকে জানায়, তাদের টাকা দেওয়ার সময় স্থানীয় শওকত আলী তাদের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা করে নেয়।
কিশোরী সুমি আক্তার, নদী আক্তার ও মাসুমা খাতুনসহ বেশ কয়েকজন কিশোরী জানায়, তালিকায় তাদের নাম থাকলেও তারা টাকা পায়নি। অপরদিকে এক কিশোরীর হাতে কয়েকজনের টাকা দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
অনুদান দেওয়ার তালিকায় নাম থাকা কড়াইবরিশাল এলাকার ১৫ থেকে ২০জন নারী সোমবার ওই এলাকায় গিয়ে হালিমা খাতুন ও আব্দুস সাত্তার মেম্বারের বাড়িতে তালা ঝুলতে দেখে ফিরে যাওয়ার কথা জানা যায়।
এদিকে অনুদানের অর্থ বিতরণের সাথে জড়িত স্থানীয় কারো কাছ থেকে সিডবি¬উএফডি নামের সেই সংগঠনের কোনো পরিচয় কিংবা কর্তৃপক্ষ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।
অনুদানের টাকা বিতরণে সংশি¬ষ্ট হালিমা খাতুন জানান, তিনি কোনো চাকরি করেন না। সিডবি¬উএফডি নামের একটি সংগঠন থেকে দুজন এসে তালিকা অনুযায়ী ২ হাজার ৫০০ টাকা বিতণের কথা জানান। তাদের দেওয়া তালিকা মোতাবেক তিনি কিশোরীদের মোবাইল ফোনে কল করে ডেকেছেন মাত্র। তারা জন প্রতি আড়াই হাজার টাকা করে পেয়েছে। এর বেশি তিনি আর কিছু জানেন না বলে দাবি করেন।
কিশোরীদের অনুদানের টাকার বিনিময়ে উৎকোচ আদায়কারী শওকত আলী জানান, সাত্তার মেম্বার তার কাছ থেকে কয়েকটি নাম চেয়েছিল। তিনি পাঁচটি নাম দিয়েছিলেন। পরে ওই পাঁচজনের কাছ থেকে জন প্রতি ১ হাজার টাকা করে নিয়ে তিনি সাত্তার মেম্বারকে দিয়েছেন। এর বেশি তিনিও কিছু জানে না বলে দাবি করেন।
নয়ারহাট ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আব্দুস সাত্তারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি কারো কাছ থেকে কোনো টাকা-পয়সা নেইনি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিনহাজুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। কে বা কাহারা টাকা বিতরণ করেছে, তারা তাকে জানায়নি বলে জানান তিনি।
"