আনোয়ার হোসেন, কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী)
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ
আগাম আলু তোলা শুরু অবরোধে দুশ্চিন্তা চাষির
৪ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আগাম আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের সমতল জনপদের কুষকরা আগাম নতুন আলুর সুখবর এনেছেন। বেশি দামে নতুন আলুর বাজার ধরতে তারা আগেভাগে আলু তোলা শুরু করেছেন। ফলন একটু কম হলেও চড়া বাজার মূল্য পেয়ে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন। খরচ বাদে দ্বিগুণ লাভবান হওয়ায় তাদের মধ্যে বইছে আনন্দের ঢেউ।
অন্যদিকে, চলমান হরতাল-অবরোধে দেশের বিভিন্ন মোকামে আলু সরবরাহ নিয়ে কৃষক, ব্যবসায়ীদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। তারা জানান, এবার তিন গুণ দামে কিনতে হয়েছে আলুর বীজ, সেই সঙ্গে বেড়েছে সব কৃষি উপকরণের বাজার মূল্য। সবকিছু মিলে আলুর উৎপাদন খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে দ্বিগুণ। সঠিকভাবে আলু বাজারজাত করতে না পারলে মাঠের আলু মাঠেই নষ্ট হওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। এতে পথে বসা ছাড়া তাদের সামনে কোনো পথ থাকবে না। হরতাল-অবরোধ যেন ভাবিয়ে তুলেছে হাজারো আলুচাষির।
জানা যায়, প্রতি বছর উপজেলার কৃষকেরা উঁচু ডাঙ্গা বিস্তীর্ণ মাঠগুলোতে আগাম আমন ধানের পর আগাম বাজার ধরার আশায় ৫৫ থেকে ৬০ দিনে উত্তোলনযোগ্য সেভেন জাতের আগাম আলুর বীজ বুনেন। বর্তমানে সেই খেত থেকে আগাম আলু উত্তোলনের উৎসবে মেতে উঠেছেন তারা। বাড়তি ঝামেলা ছাড়াই নগদ দামে খেতের আলু খেতে ৭৮ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। এ আলু স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ করা হচ্ছে রাজধানীসহ বিভিন্ন বিভাগীয় জেলা শহরে। আর কদিন বাদে আলু উত্তোলনে ভরা মৌসুম শুরু হবে। চলতি বছর ৪ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আগাম আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাহাগিলী ইউপির উত্তর দুরাকুটি পশ্চিমপাড়া গ্রামের আলম হোসেন ১ বিঘা, এনদাদুল ১ বিঘাসহ রনচন্ডির কুটিপাড়া গ্রামের শমসের আলী ২ বিঘা, আব্দুল হাই ১ বিঘা, মজনু মিয়া ২ বিঘা জমির আগাম আলু উত্তোলন করছেন।
কৃষক শমসের বলেন, বরাবরের মতো চলতি বছর আশ্বিনের প্রথম সপ্তাহে ২ বিঘা জমির ৬১ দিন বয়সি সেভেন জাতের আলু উত্তোলন করছি। ২ বিঘায় ৩০ বস্তা আলু হবে। আগাম হিসেবে ফলন কিছুটা কম হলেও বাড়তি খরচ ছাড়াই খেতে ৭৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলাম। ওই পরিমাণ জমিতে খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। যা বিক্রি করে ৫০ টাকা লাভের আশা করা হচ্ছে।
অপর কৃষক আব্দুল হাই বলেন, প্রতিবার আগাম আলু চাষ করে ভালো লাভবান হই। এ বছর দিগুণ লাভের আশায় আগাম আমন ধান কাটামাড়াই করে ৪ বিঘা জমিতে আগেভাগে আলুর বীজ রোপণ করেছি। ১ বিঘা জমির আলু উত্তোলন করা হচ্ছে। জমিতে ৭৭ টাকা কেজি দরে আলু ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করা হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান আলম বলেন, দেশের বাজারে এই প্রথম কিশোরগঞ্জের নতুন আলু উঠতে শুরু হয়েছে। আলুর বাম্পার ফলন ও চড়া দাম পেয়ে চাষিরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন।
"