বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর বাউফল
জমি বিক্রি না করায় তিন মাস ঘরছাড়া জেলে দম্পতি
পটুয়াখালীর বাউফলে বসতবাড়ির জমি বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় মারধর করে এক জেলে দম্পতিকে বাড়ি ছাড়া করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার বাড়ি কাঁটাতার ও বাঁশের বেড়া দিয়ে দখল করে নেওয়া হয়েছে। উপজেলার কচুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, প্রায় ১২ বছর আগে কচুয়া গ্রামে ২৬ শতাংশ জমি কেনেন জেলে নান্নু প্যাদা (৪২) ও ইয়ানুর বেগম (৩৫) দম্পতি। জমিতে ঘর তুলে ছেলে সন্তান নিয়ে বসবাস শুরু করেন। তাদের বাড়ির পাশেই ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবকলীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাবিষয়ক সম্পাদক দিদারুল আলম টুকুর বাড়ি। দীর্ঘদিন জেলে দম্পতির জমি দখলে নিতে পায়তারা করে আসছিলেন টুকু। জমি বিক্রি করে অন্যত্র চলে যেতে চাপ দেন ওই নেতা। পরিবার জমি বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় বিভিন্ন সময় মারধর ও নির্যাতন করেন। এরপর তিনমাস আগে ওই বাড়িতে কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে ওই দম্পতির চলাচলের পথ বন্ধ করে দেন। এরপর মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয় নান্নু ও ইয়ানুরকে। সেই থেকে তারা প্রাণের ভয়ে বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
ভুক্তভোগী ইয়ানুর বেগম বলেন, ‘খেয়ে না খেয়ে টাকা জমিয়ে ২৬ শতাংশ জমি কিনে বাড়ি করি। কিন্তু এ জমিতে টুকুর নজর পড়ে। জোর করে জমি দখল করতে চায়। জমি বিক্রি করতে চাপ দেয়। আমি রাজি না হওয়ায় চারপাশে বেড়া দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দেয়। মারধর করে বাড়িছাড়া করে। প্রাণের ভয়ে ছেলে, স্বামী নিয়ে বাবার বাড়িতে ভাঙা করে আশ্রয় নিয়েছি।’
নান্নু বলেন, ‘তারা প্রভাবশালী। তাদের অনেক ক্ষমতা। আমরা গরিব মানুষ। আমাদের কথা কেউ শোনে না। মেম্বার, চেয়ারম্যান ও ইউএনওর কাছে গিয়েও বিচার পাইনি। প্রাণে বাঁচতে নিজের ঘরবাড়ি ছেড়ে শ্বশুর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি।’ বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অলিউল্লাহ বলেন, অসহায় জেলে পরিবারের চলার পথ বন্ধ করায় মানবিক কারণে আমার জায়গা দিয়ে বিকল্প পথ খুলে দিয়েছিলাম। সেই পথও বন্ধ করে দিয়েছে তারা। বিষয়টি সমাধানের জন্য ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও কোনো সুরাহা হয়নি।
দিদারুল আলম টুকু বলেন, ওই জমি আমার কাছে বিক্রি করার কথা ছিল। তারা বিক্রি করেনি। পাশের জমি তো আমার। আমার জমিতে আমি বেড়া দিয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বশির গাজী বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসিল্যান্ডকে পাঠানো হয়েছিল। তিনি সরেজমিনে তদন্ত করে এসেছেন। শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
"