কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ
তদারকির অভাব প্রাথমিকে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থী সংকট
শিক্ষার্থীর অনুপস্থিতির কারণে এক-তৃতীয়াংশ বিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ পাঠদান ব্যাহত

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে তদারকির অভাবে শিক্ষার্থী সংকটের অভিযোগ উঠেছে। খাতায় কলমে শিক্ষার্থী ও হাজিরা উপস্থিতি প্রায় শতভাগ থাকলেও বাস্তবে বিদ্যালয়গুলোতে এর বিপরীত চিত্র বিরাজ করছে। এতে অনিয়মিত শিক্ষার্থীরা উপবৃত্তি পাওয়ায় ও বিদ্যালয়ে শিক্ষকগণ অলস সময় কাটানোয় সরকারের উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলায় ১৭৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩৪ হাজার ৯১৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। কিন্তু শিক্ষা অফিসের উদাসীনতায় শিক্ষার্থীর অনুপস্থিতির কারণে এক তৃতীয়াংশ বিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া শিক্ষার্থী সংকটে অসংখ্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ শ্রেণিকক্ষে অলস সময় পার করছেন। পরিদর্শন, তদারকি, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ও হোম ভিজিট কম হওয়ায় এ অবস্থার হয়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষকদের। বিদ্যালয়গুলো হলো, উত্তর কালিকাপুর পশ্চিমপাড়া, বদি শিশু কল্যাণ, দক্ষিণ দুরাকুটি, মুশরুত পানিয়াল পুকুর পূর্বপাড়া, মধ্যরাজিব আদর্শ, বাড়ি মধুপুর গুচ্ছগ্রাম, নিতাই ডাংগাপাড়া, পুটিমারী ঝাকুয়াপাড়া, উত্তর বাহাগিলি
ডাংগাপাড়া, কালিকাপুর চৌধুরীপাড়া ও পানিয়াল পুকুর মৌলভীরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এসব বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শিফ্টে ৫-১০ জনের বেশি শিক্ষার্থীর দেখা যায় না। কিন্তু ভর্তি হওয়া সকলে উপবৃত্তি পায়।
সরেজমিনে আরো দেখা গেছে, বদি মাঝাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খাতায় ভর্তিকৃত শিক্ষার্থী ৮৫জন। গত মঙ্গলবার দুপুরে বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থী শূন্য দেখা যায়। উপস্থিত শিক্ষিকা আয়েশা সিদ্দিকা জানান, প্রধান শিক্ষক আসেন নি। অপর একজন শিক্ষিকা ছুটিতে আছেন। প্রায় ৩ মাস আগে এটিইও স্যার বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছেন। পাশে পাইভেট ও প্রমোট স্কুলের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। পশ্চিম বদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খাতায়-কলমে শিক্ষার্থী ২৮ জন।
ময়না নামে একজন শিক্ষিকা বলেন, ‘৫জন শিক্ষকের মধ্যে আমরা দুইজন আছি। হেড স্যার শিক্ষা অফিসে, একজন ট্রেনিংয়ে ও আর একজন বাড়িতে গেছেন। পরিদর্শন বহি হেড স্যারের কাছে থাকায় এটিইও স্যার কবে পরিদর্শন করেছেন তারিখ বলতে পারবো না। একটাই সমস্যা শিক্ষার্থী নাই।’
এদিকে জানা গেছে, উত্তর মাষ্টারপাড়া আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ৮২ জন। হাজিরা খাতায় শিক্ষার্থীর উপস্থিতি প্রায় শতভাগ দেখালেও দ্বিতীয় শিফ্টে ৭ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত পাওয়া গেছে। প্রধান শিক্ষক পারুল রাণী কর্মস্থলে না থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি। উপস্থিত তিনজন সহকারী শিক্ষিকা জানান, মাঝে মধ্যে হোম ভিজিট করা হয়। পাশাপাশি স্কুল ও অভিভাবকদের আর্থিক কারণে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমছে।
ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংকটের বিষয়ে কিশোরগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মাদ মুঠোফোনে বলেন, ‘সব স্কুলেতো এ অবস্থা বিরাজ করছে না। কিছু স্কুলে শিক্ষার্থী সংকট দেখা দিয়েছে।’ অফিসে আসেন বলে, ও কথা ভালভাবে শোনা যাচ্ছেনা বলে ফোন কেটে দেন তিনি।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাজাহান আলী বলেন, এ বিষয়ে তদারকি করে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
"