সোহেল রানা, পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা)
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী
ফ্রিজিয়ান গরু পালনে কোটিপতি লালা চৌধুরী
বেকারত্ব দূর করতে ও নিজেকে স্বাবলম্বী করার স্বপ্ন নিয়ে গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে বিদেশি জাতের ফ্রিজিয়ান গরু পালন করে কোটিপতি হয়েছেন লালা চৌধুরী। তিনি উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের ঝালিঙ্গী গ্রামের সেকেন্দার আলীর ছেলে। গাভির দুধ বিক্রি করে দৈনিক ১০ হাজার টাকা আয় করছেন তিনি।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, লালা চৌধুরী ঢাকায় একটি বে-সরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। চাকরি ছেড়ে বাড়িতে আসার পর কোনো কাজকর্ম না পেয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েন। কীভাবে তিনি তার বেকারত্ব মোচন করবেন তা ভাবতে থাকে। তিনি স্বপ্ন দেখতেন নিজেকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার। ২০১৯ সালের ১৮ জুন পলাশবাড়ী উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আলতাব হোসেনের পরামর্শে ৪টি ছাগল ও একটি বকনা বাছুর কিনে আনেন। তার বাড়ির পাশে নিজস্ব ৫০ শতাংশ জমির মধ্যে ২০ শতাংশ জমির ওপর গরুর সিড তৈরি এবং ৩০ শতাংশ জমিতে নিপিয়ার পাঞ্চং ঘাস রোপণ করে খামার শুরু করেন। দুই মাস পর ৯২ হাজার টাকা দিয়ে বিদেশি জাতের একটি ফ্রিজিয়ান গাভি কিনে আনেন। এক মাস পর ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা দরে বিদেশি জাতের আরো ফ্রিজিয়ান দুটি গাভি ও বেতকাপা থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিয়ে একটি গাভি কিনে নেন। চারটি ছাগল ও পাঁচটি গাভি পালনের মধ্য দিয়ে খামারে নিজেই শ্রম দিতে থাকেন।
ধীরে ধীরে গাভিগুলো বাছুর দিতে শুরু করে। তার খামারে বেড়ে যায় গাভির সংখ্যা ও কাজের চাপ। খামারে কাজের চাপ বেশি হওয়ায় খামারে গাভিগুলোর দেখাশোনার জন্য ওই গ্রামের আইয়ুব আলী ও আরব খাঁ নামে দুই ব্যক্তিকে দৈনিক ৪০০ টাকা করে দেওয়ার শর্তে শ্রমিক নেন এবং তিনি নিজে থেকে সব কাজকর্ম করেন। লালা চৌধুরীর কঠোর পরিশ্রমে এখন তার খামারে ফ্রিজিয়ান গাভির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২টিতে। দৈনিক ২০০ লিটার দুধ দিচ্ছে। দুধ বিক্রি করে তার দৈনিক প্রায় ১০ হাজার টাকা আয় বেড়েছে। এখন তিনি একজন সফল খামারি।
সফল খামারি লালা চৌধুরী বলেন, ফ্রিজিয়ান একেকটি গাভির বাজার মূল্য ৩ থেকে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা। আমার খামারে ৩২টি ফ্রিজিয়ান গাভি আছে, যার মূল্য প্রায় ১ কোটি টাকা হবে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ আলতাব হোসেন স্যার আমাকে বিভিন্ন সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদান করেছেন। মাঝেমধ্যে খামারে এসে খোঁজখবর নেন। তাছাড়া আল্লাহর রহমতে আমি আমার পরিবার পরিজন নিয়ে অনেক ভালো আছি। আমার সংসারে আর কোনো অভাব নেই।
পলাশবাড়ী উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আলতাব হোসেন বলেন, যারা নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য উঠে দাঁড়াতে চায় তাদের পাশে আমরা আছি এবং থাকব।
"