লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি
লামা ও আলীকদমে কমছে বাঁশ থেকে রাজস্ব
বান্দরবানের লামা ও আলীকদম উপজেলায় বাঁশ বিক্রি ও ইজারা থেকে এক সময় বছরেকোটি রাজস্ব আয় করতে বন বিভাগ। সাম্প্রতিক বছরে এর পরিমাণ কমে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকায় নেমে এসেছে।
জুমিয়াদের নির্বিচারে বাঁশ নিধন,ইজারির অধিক বাঁশ সংগ্রহ ও বন বিভাগের তদারকি না থাকায়পার্বত্য চট্টগ্রামেপ্রতিবছরবাঁশ উৎপাদন কমে যাচ্ছে।এতে কোটি টাকারসরকার হারাচ্ছে সরকার। রক্ষণাবেক্ষণ পেলে লামা-আলীকদমের বাঁশ সম্পদ জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
২০২২-২৩ অর্থবছরে মাতামুহুরীরসংরক্ষিত এলাকার ৪টি বাঁশ মহাল ইজারা দেওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে কী পরিমাণ রাজস্ব আদায় হয়েছে, সেই সঙ্গে চলতি বছর কত টাকা রাজস্ব আয় হয়ে, তা নিয়ে পরিষ্কার কিছু জানায়নি লামা বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
বাঁশ শিল্প ও বনবিভাগ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশের বাঁশের মধ্যে জঙ্গলি ও আবাদি প্রকৃতির ২৬টি প্রজাতি ও একটি ভ্যারাইটি ৭ গনের অন্তর্ভূক্ত।এ সব বাঁশ দিয়ে দেশেঘরের অবকাঠামো, মঞ্চ নির্মাণ,হস্তশিল্পসহ নিত্যদিনের ব্যবহারের নানা জিনিস তৈরি হয়।বাঁশ ঝাড়মাটির ক্ষয়রোধসহ প্রকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।এ ক্ষেত্রে পার্বত্য অঞ্চলের বাঁশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ ছাড়া পার্বত্য এলাকায় কচি বাঁশের ডগা (বাঁশ কোরল)সবজি হিসেবে খাওয়া হয়।
এদিকে বাঁশের বংশ বিস্তারের জন্য সরকার বছরে তিনমাস বাঁশ কাটা নিষিদ্ধ করেছে বলে বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। তবে বাঁশ আহরণকারী বা ব্যবসায়িরা নিয়মটি মানছেন না। এ ছাড়া সরেজমিন পর্যবেক্ষণ না করে অনুমান নির্ভর বাঁশ মহল ইজারা দেওয়া হচ্ছে। বাঁশ ব্যবসায়িদের অবৈধ সুযোগ করে দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। মাত্র ৫০ হাজার বাঁশের রাজস্ব চালান জমা করে মাতামুহুরী নদীপথে দেড় থেকে দুই লাখবাঁশ নেওয়া হয় বলে স্থানীয়বাসিন্দাদের অভিযোগ।এতে বাঁশের প্রকৃত রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
জানচাইলে পার্শ্ববর্তী কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার বাঁশ ব্যবসায়ি সমিতির সদস্য মুজিব জানান, ৭৪ লাখ টাকার সঙ্গে ২০ শতাংশ ভ্যাটসহ মোট ৭৫ লাখ ৪৮ হাজার টাকায় ২২ লাখ বাঁশের টেন্ডার পান তারা। নিয়ম মেনে রাজস্ব দিয়ে নদীপথে বাঁশ বহন করা হচ্ছে। টিপির বাইরে কোনো বাঁশ নিচ্ছেন না বলেও দাবি করেন তিনি।
অনিয়মনের অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক বেলাল জানান, যথাযথ সরকারি নিয়ম মেনে বাঁশ মহালদরপত্র দেওয়া হয়। চলমান পাস দিয়ে নদী পথে বাঁশ নেওযা হচ্ছে। এখানে অনিয়ম কোনো কিছুই দেখছি না।
"