আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
গাজীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেও ‘গোপনে’ শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ

বরগুনার আমতলীর গাজীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি নিয়ে হ য ব র ল অবস্থা দেখা দিয়েছে। এই নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে বরগুনা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে প্রতিকার চেয়ে লিখিত আবেদন করেছেন প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদে আবেদনকারী মনিরুল ইসলাম।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, ২০২১ সালের ২৮ ডিসেম্বর গাজীপুর বন্দর মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদে নিয়োগের জন্য একটি দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। ওই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী মনিরুল ইসলামসহ ১২/১৩ জন ২ হাজার টাকার ব্যাংক ড্রাফটসহ আবেদন করেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবেদনগুলোর কোনো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করেন নাই। অভিযোগকারী বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারেন ২০২৩ সালের ১০ এপ্রিল ওই পত্রিকায় সহকারী প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে এবং চলতি বছরের ২৭ এপিল পত্রিকায় প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। গোপনভাবে নামমাত্র প্রার্থীদের নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিয়ে পছন্দের প্রার্থীদের টাকার বিনিময় প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রদানের লক্ষ্যে যাবতীয় কাজ প্রায় সম্পন্ন করেছেন।
২০০০ টাকার ব্যাংক ড্রাফটের বিনিময়ে যারা আবেদন করেছেন নতুন বিজ্ঞপ্তিতে তাদের কথা উল্লেখ না করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এ ছাড়াও, নতুন বিজ্ঞপ্তিতে (২য় বার)/পুন: নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির উল্লেখ নাই।
এ ঘটনায় চলতি বছরের ১৬ আগস্ট অভিযোগকারী মরিুল ইসলাম গাজীপুর বন্দর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতিকে তার মুঠোফোনে কল দিয়ে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে কি না জানতে চাইলে সে তা জানাতে অস্বীকার করেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেকও অস্বীকার করেন। এ ছাড়াও, বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির বিরুদ্ধে দেওয়ানী আদালতে একটি মামলা চলমান। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আ. খালেক যিনি জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে তৃতীয়। বদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. শাহীন মো. আ. খালেক মিয়াকে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক দেখিয়ে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করে। সেই আদেশকে ভুল বুঝিয়ে বোর্ড চেয়ারম্যানকে ম্যানেজ করে আ. খালেককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেন। আ. খালেক মিয়া শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় সহকারী শিক্ষক মো. শাহীন অফিসের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। শাহীন নিজের স্বার্থ আদায়ে সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ পেতে গোপনে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশসহ যাবতীয় কূটকৌশল করে আসছে।
অভিযোগকারী মনিরুল ইসলাম পুনরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পূর্বের আবেদনকারীসহ সব আবেদনকারীকে অবহিত করে সবার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
স্কুলের সহকারী শিক্ষক মো. শাহিন তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক ২০২১ সালের ২৮ ডিসেম্বর প্রধান শিক্ষকের নিয়োগের
বিজ্ঞপ্তির কথা স্বীকার করলেও পরের বিজ্ঞপ্তিগুলো কে দিয়েছে তা তিনি জানেন না বলে জানিয়েছেন।
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. আব্দুর রব বলেন, প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষক নিয়োগ-সংক্রান্ত কোনো বিজ্ঞপ্তির বিষয় আমি জানি না । এ বিষয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জানেন।
বরগুনা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মাদ জসিম উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
"