গাজী শাহাদত হোসেন ফিরোজী, সিরাজগঞ্জ

  ০৪ জুন, ২০২৩

সিরাজগঞ্জের নকশিকাঁথা যাচ্ছে বিদেশে

সিরাজগঞ্জ থেকে কালের আবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে নকশিকাঁথা। সুই-সুতা আর কাপড় দিয়ে হাতে বানানো ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ নকশিকাঁথা।

একসময় জেলার বিভিন্ন উপজেলার খেটে খাওয়া পরিবারের দলবদ্ধ গৃহবধূ ও কিশোরীদের হাতের ছোঁয়ায় নতুন এবং পুরাতন কাপড় দিয়ে তৈরি হতো নিত্যনতুন নকশিকাঁথা। এই কাঁথায় সুই আর সুতা দিয়ে তাদের হাতের ছোঁয়ায় ফুটিয়ে তোলা হতো নানা রঙের নকশা। অতীতে বিভিন্ন বিবাহ অনুষ্ঠানে বরযাত্রীদের বসতে দেওয়া হতো খড়ের ওপর পাটের চট বিছিয়ে। আর বর আর তার সঙ্গী কোলদারদের বসতে দেওয়া হতো কাঁথার ওপর চাদর বিছিয়ে। এখন সেই বসার আসন দখল করেছে ছোপাসেট, চেয়ার, টেবিলসহ আধুনিককালের আসবাপত্র। এ ছাড়া জন্মলগ্ন থেকে ছোট শিশুদের প্রতিপালনের জন্য ধনী ও দরিদ্র পরিবারের সবাই কাঁথা ব্যবহার করত।

তবে এই প্রাচীন ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে সিরাজগঞ্জে বিভিন্ন সংগঠন কাজ করছে এর মধ্যে মোহনা হস্ত ও কুটির শিল্প অন্যতম। সংগঠনটি স্থানীয় অসহায় নারীদের প্রশিক্ষন দিয়ে তাদের দিয়ে তৈরী করছেন নকইশ কাঁথা, বেডসিড, থ্রি পিস। তবে নকশিকাঁথার চাহিদা দেশের গন্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে আমেরিকা, নেদারল্যান্ডসসহ বিভিন্ন দেশে ।

শহরের আমলা পাড়া মহল্লার রাবেয়া, সুলতানা, সুমি বলেন, আমরা এখানে নকশিকাঁথা সেলাই করে আমাদের বাড়তি আয় হচ্ছে অন্যান্য কাজের ফাকে আমরা এই কাজ করে সংসারে সচ্ছলতা এসেছে।

তারা আরও জানান, কাঁথা তৈরী করতে ২০-৩০ দিন সময় লাগে। আমরা মুজুরী নেই ১৫শ হতে ২ হাজার টাকা।

প্রোগ্রাম ফর উইমেন ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক জানান, প্রাচীন ঐতিহ্য এই নকশিকাঁথা শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যই তিনি এলাকার অসহায় নারীদের একত্রিত করে নকশি কাঁথা সেলাই শুরু করেন। প্রথম দিকে তেমন সারা না পেলেও এখন বেশ সারা পাচ্ছেন । তার তৈরী নকশি কাঁথা ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, ময়মনসিংসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ছাড়াও বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে। সরকারি সহযোগীতা পেলে এই শিল্পকে আরো অনেক দুর এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে ।

জানা গেছে এক সময় এই গ্রামীণ কাঁথা সেলাই করে সংসারও চালাতেন অনেকেই। তবে এখনও অর্থনৈতিক কর্মকান্ড হিসেবে উৎপাদন, আয় বৃদ্ধি ও নতুন কর্মসংস্থান তৈরির ক্ষেত্র হিসেবে ‘রঙ্গিন নকশি কাঁথার’ ক্ষাতে অপার সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারি বেসরকারি সংস্থা এগিয়ে আসলে গ্রামীন ঐতিহ্যবাহী এ কাঁথাকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব বলে মনে করেন সচেতন মহল ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close