ইউসুফ আলী সুমন, মহাদেবপুর (নওগাঁ)
নওগাঁর মহাদেবপুর
বিদ্যালয়ে ডেকে নিয়ে ছাত্রকে পেটালেন সভাপতি
নওগাঁর মহাদেবপুরে উত্ত্যক্তের অপবাদে এক স্কুলছাত্রকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে বিদ্যালয়ে লাঠিপেটা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে।
মারধরে আহত স্কুলছাত্র মারুফ হাসান (১৫) দুদিন ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। তবে ঘটনার পর চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালের নিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেছে তার পরিবার।
স্কুলছাত্রকে মারধরের ঘটনা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হাসান আলী স্বীকার করলেও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলছেন, বিষয়টি তিনি জানেন না।
মারুফ হাসান জয়পুর ডাঙ্গাপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র। সে ওই ছাত্র উপজেলার জয়পুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্কুলছাত্র মারুফ গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সাংবাদিকদের কাছে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা উত্ত্যক্ত (ইভটিজিং) করার অভিযোগ আনা হয়েছে বলে দাবি করে।
ঘটনা সম্পর্কে মারুফ জানায়, গত বুধবার সকালে তাকে বাড়ি থেকে স্কুলে ডেকে নেন বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হাসান আলী। সেখানে তাকে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেদম পেটানো হয়। এতে তার দুই হাত, পিঠ ও শরীরের বিভিন্নস্থানে কালো দাগ পড়ে যায়। বিষয়টি জানতে পেরে তার বাবা বিদ্যালয়ের ছুটে গিয়ে এর প্রতিবাদ জানান। তবে সভাপতি হাসান আলী তাকেও রড দেখিয়ে পেটানোর হুমকি দেন।
হাসপাতালে উপস্থিত মারুফের বাবা জাহাঙ্গীর আলম জানান, কোন মেয়েকে মারুফ ইভটিজিং করেছে- জানতে চাইলেও সভাপতি বলতে পারেননি। ঘটনার পর এলাকার লোকজন ও অভিভাবকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে তাদের হুমকি ধামকি দিতে থাকে সভাপতির লোকেরা। এমনকি তারা মারধরে আহত মারুফকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আনতেও বাধা দেন। তবে রাতে অবস্থার অবনতি ঘটলে বৃহস্পতিবার সকালে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হরে বিদ্যালয়ের সভাপতি হাসান আলী স্কুলছাত্রকে লাঠিপেটা করা কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, অপরাধির বিচার তিনি নিজের হাতেই করেছেন।
কাকে উত্ত্যক্ত করা হয়েছে জানতে চাইলে হাসান আলী বলেন, ‘স্কুলের সব মেয়েকেই সে (মারুফ) ইভটিজিং করেছে। তার মধ্যে আমার ভাতিজিও আছে।’ তাই আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়ার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি ‘ঠিকই করেছেন’ বলে সাংবাদিকদের জানান।
জানতে চাইলে
জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম জানান, ঘটনার দিন তিনি স্কুলে উপস্থিত ছিলেন না, এ জন্য বিষয়টি জানেন না। তবে বিষয়টি মীমাংশার উদ্যোগ নিয়েও তা ব্যর্থ হয়েছে বলে তিনি জানান।
মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, মারধরের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
"