সুমন ইসলাম, মুন্সীগঞ্জ

  ২৮ মে, ২০২৩

মুন্সীগঞ্জের চরমশুরা গ্রাম

দুই পায়ের পথ

পাঁচ বছর আগেও এখানে আট ফুট চওড়া একটি ইটের এ রাস্তা ছিলো। এ রাস্তা দিয়ে লোকজন, রিকসা, অটোরিক্সা, কৃষক তার মাঠের ফসল তুলে ট্রলি গাড়ি করে নিজ গন্তব্যে যেতো। ২০১৯-২০ সালের বর্ষায় মেঘনা নদীর স্রোত আর বৃষ্টিতে ইটের রাস্তাটি ভেঙ্গে পড়ে পাশ্ববর্তী খালে। ভেঙ্গে যাওয়ার পরে এ পর্যন্ত নতুন করে রাস্তাটির সংস্কার কাজে হাত দেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। যানবাহন তো দূরে থাক, এখন দীর্ঘ দেড় কিলোমিটার ভাঙ্গা রাস্তাটিতে যাতায়াতে স্থানীয়দের দুটি পা সম্বল।

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়নের চরাঞ্চলের চরমশুরা গ্রামের আলীরটেক কাউয়াদি সড়কে শনিবার (২৭ মে) সরেজমিন দেখা গেছে, রাস্তার কিছু স্থানে এখনো ইটের অস্তিত্ব আছে। অনেক স্থানে বড় বড় গভীর খাদ, সে খাদের উপর বাঁশ দিয়ে বানানো হয়েছে সাঁকো। প্রতিদিন এ গ্রামের শতশত লোকজন ওই সাকোঁ উপর দিয়ে যাতায়াত করছেন।

স্থানীয় লোকজন বলেন, এ এলাকার জন্য সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ। কাউয়াদি, আলীরটেক, দক্ষিণ চরমশুরা এলাকার ৫ থেকে ৬ হাজার গ্রামবাসী তাদের নিত্যদিনের প্রয়োজনে এ সড়কটিতে যাতায়াত করে থাকেন। এ সড়কের দুপাশে রয়েছে চরমশুরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চরজাপটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। রাস্তাটির সংস্কার না হওয়ায় ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।

দেখা যায়, আলীরটেক বাজার থেকে ১০ ফুট চওড়া এ সড়কটি ধরে ১৫মিটার সামনে এগুতে দেখা গেলো মাত্র দুই ফুট চওড়া মাটির রাস্তা। এ রাস্তা দিয়ে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার গুয়াগাছিয়া এবং চাঁদপুর জেলার মতলব থানার ২-৩ হাজার লোকজন স্বল্প সময়ের মধ্যে মুন্সীগঞ্জ শহর হয়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ যাতায়াত করে থাকে।

গ্রামের বাসিন্দা জোসনা বেগম বলেন, বাজার থেকে এক বস্তা চাউল আনতে অনেক কষ্ট হয়। জমির ফসল, বিয়ে শাদীর অনুষ্ঠান, শহর থেকে মালামাল নিয়ে এ রাস্তা দিয়ে পায়ে হেঁটে যেতে কতো যে কষ্ট, তা আমাদের ছাড়া কেউ বুঝবে না। চরকেওয়ার ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মন্টু দেওয়ান এ বিষয়ে বলেন, দশ বছর ধরে রাস্তাটির বেহাল দশা। তার মধ্যে ইটের সলিং করা হয়েছিলো। তারপরে এ রাস্তার জন্য কোনো বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। ফলে রাস্তার সংস্কার কাজ করা হয়ে উঠেনি।

গুয়াগাছিয়া এলাকার বাসিন্দা নূর হোসেন বলেন, গুয়াগাছিয়া থেকে গজারিয়া হয়ে সোনাগাঁও, নারায়ণগঞ্জ দিয়ে ঢাকায় যেতে ৫-৬ ঘন্টা সময় ব্যয় হয়। কিন্তু ট্রলারে করে মেঘনা নদী পাড় হয়ে এ পথে ঢাকায় যাতায়াতে কম সময় ব্যয় হয়। বহু বছর ধরে রাস্তারটি ভেঙ্গে যাওয়ায় অনেক পথ পায়ে হাটতে হয়।রাস্তাটি সংস্কার করে দিলে সবার ভোগান্তি কমবে।

চরকেওয়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফসার উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, এ রাস্তাটির এক-দেড় কিলোমিটার। এটির পূর্ব পাশে গভীর খাল। রাস্তাটি টিকিয়ে রাখতে হলে আগে সুরক্ষা দেয়ালের ব্যবস্থা করতে হবে। স্থানীয় সংসদ সদস্য রাস্তাটি দেখে গেছেন। বড় প্রকল্প পেলে রাস্তার সংস্কার কাজ করা হবে। মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার এলজিইডির প্রকৌশলী মো. সফিকুল আহসান রাস্তার সংস্কারের বিষয়ে বলেন, এ রাস্তাটি আমাদের নয়। রাস্তাটি সংস্কার কাজ করতে হলে জেলা পরিষদ অথবা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের মাধ্যমে করতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close