চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

  ২৬ মে, ২০২৩

ব্রহ্মপুত্রের চরে গাড়ল পালনে দিনবদলের স্বপ্ন

গাড়লের খামার গড়ে দিনবদলের স্বপ্ন দেখছেন কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলের অবসরপ্রাপ্ত এক সেনা সদস্য। উপজেলার চর শাখাহাতিতে শতাধিক গাড়ল নিয়ে এই খামার গড়েছেন তিনি। খামারে পালিত গাড়ল বেচে তিনি প্রতি মাসে লক্ষাধিক টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখছেন।

অবসরপ্রাপ্ত ওই সেনা সদস্যের নাম রফিকুল ইসলাম। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক সার্জেন্ট বলে জানা গেছে। গত বছরের শেষ দিকে তিনি নিজ বাড়িতে গাড়লের খামার গড়ে তোলেন।

প্রাণিবিশেষজ্ঞরা বলছেন, গাড়ল দেখতে অনেকটা ভেড়ার মতো। তবে এরা আকারে এবং ওজনে ভেড়ার চেয়েও বড়। এরা আসলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নাগপুরের ভেড়ার ক্রস ব্রিড। এরা মাত্র এক বছর বয়স থেকে বাচ্চা দেওয়া শুরু করে। সাধারণত বছরে দুবার বাচ্চা দেয়।

গাড়লের খামারে গিয়ে দেখা গেল, চরজুড়ে শতাধিক গাড়ল বিচরণ করছে। পাশেই খামারে টিন শেডের ঘর। সেখানে গাড়ল থাকার জন্য তৈরি করা হয়েছে মাঁচান। গাড়লের খাবারের বাড়তি চাহিদা মেটানোর জন্য খামারের পাশেই রয়েছে ঘাসের আবাদ।

রফিকুল জানান, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি গাড়লের খামার গড়ে তোলেন। প্রথম দফায় মেহেরপুরের এক খামারির মাধ্যমে তিনি ভারত থেকে নিয়ে আসা ৫২টি গাড়ল নিয়ে আসেন। দ্বিতীয় দফায় আরো ৩৬টি গাড়ল নিয়ে খামারের যাত্রা শুরু। পরে দুই মাসেই খামার থেকে আয় শুরু করেছেন। গত ৮ মাসের এই খামার থেকে তিনি ১৪টি বাচ্চা গাড়ল ২ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। এখন তার খামারে ১০২টি গাড়ল রয়েছে।

রফিকুল আরো জানান, চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার সময় তিনি সিদ্ধান্ত নেন গরু ও ভেড়ার খামার করার। পরে গাড়ল সম্পর্কে জেনে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে গাড়লের খামার গড়ে তোলেন। এজন্য তিনি দেশের অর্ধশতাধিক খামার ঘুরে হাতেকলমে গাড়ল পালন সম্পর্কে

অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন। তার খামারের গাড়লের যাবতীয় পরিচর্যা ও চিকিৎসা তিনি নিজেই করেন।’

একটি বাচ্চা ভেড়ার দাম ১ হাজার ২০০ থেকে দেড় হাজার টাকা। কিন্তু একটি গাড়লের বাচ্চার দাম ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। একটি ভেড়া সর্বোচ্চ ৩০ কেজি হতে পারে। কিন্তু একটি খাবার উপযোগী গাড়ল ৪০ কেজি থেকে ১২০ কেজি ওজনের হতে পারে। আমার নিজের খামারেই ৭৮ কেজি ওজনের গাড়ল রয়েছে। গাড়ল পালনে সুবিধা নিয়ে বলেন খামারি রফিকুল।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসেন বলেন, গাড়ল পালন অত্যন্ত লাভজনক। কুড়িগ্রামের ভূ-প্রকৃতি গাড়ল পালনের জন্য উপযোগী। এর মাংসের পরিমাণ অনেক বেশি। আমিষের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি গাড়ল পালনে অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close