অলিউজ্জামান রুবেল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

  ০২ এপ্রিল, ২০২৩

চাঁপাইনবাবগঞ্জে টিসিবির পণ্য বিক্রি

রোজায় টিসিবির পণ্যে স্বস্তি

* চিনি ছাড়া পণ্য পেয়েছে ৮১ হাজার ৮৯৭ পরিবার * আবারও বিক্রি শুরু এ মাসেই

চাঁপাইনবাবগঞ্জে রমজান মাস উপলক্ষে এক লাখ ৩০ হাজার ৩২৩ জন কার্ডধারী নায্যমূল্যে টিসিবির পণ্য পেয়েছেন। তবে চিনি ছাড়াই টিসিবির পণ্য পেয়েছেন ৮১ হাজার ৮৯৭ পরিবার। গত বছরের ২০ মার্চ থেকে জেলার সব ইউনিয়ন ও পৌরসভায় এসব পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছিল। দীর্ঘ এক বছর পর শুক্রবার নায্যমূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শেষ হয়। কম দামে টিসিবির পণ্য কিনতে পেরে খুশি কার্ডধারী পরিবারগুলো। রমজান উপলক্ষে ভর্তুকি মূল্যে জেলায় আবারও কার্ডধারীদের টিসিবি পণ্য দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

টিসিবির তথ্য মতে, জেলার পাঁচটি উপজেলায় টিসিবির পণ্য পেয়েছেন এক লাখ ১৫ হাজার ৮০৯ পরিবার। এর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে ৩৩ হাজার ১০, শিবগঞ্জ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে ৪২ হাজার ৯৯১, গোমস্তাপুর উপজেলার আটটি ইউনিয়নে ২১ হাজার ২৪৯, নাচোলের চারটি ইউনিয়নে ১১ হাজার ৮১৩, ভোলাহাট উপজেলার চারটি ইউনিয়নে ছয় হাজার ৭৪৬টি পরিবার খাদ্য ক্রয়ের সুযোগ পাবে। আরও বাকি ১৪ হাজার ৫১৪টি পরিবার টিসিবির পণ্য পেয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা, শিবগঞ্জ পৌরসভা, রহনপুর পৌরসভা এবং নাচোল পৌরসভার কার্ডধারী পরিবারগুলো।

রমজান উপলক্ষে কার্ডধারী পরিবারগুলো ২২০ টাকা মূল্যে দুই লিটার তেল, ১৪০ টাকা মূল্যে দুই কেজি মসুর ডাল, ৫০ টাকা মূল্যে এক কেজি ছোলা ও ৬০ টাকা মূল্যে এক কেজি চিনি নায্য মূল্যে কিনেছেন। কিন্তু মাঝে রাজশাহী টিসিবির আঞ্চলিক কার্যালয় অন্য সব পণ্য ঠিকঠাক সরবরাহ করলেও চিনি সংকটের কারণে জেলার ৮১ হাজার ৮৯৭ পরিবার নায্যমূল্যে চিনি কিনতে পারেননি। তবে চিনিসহ টিসিবির অন্য পণ্য কিনেছে ৪৮ হাজার ৪২৬ পরিবার।

কম দামে টিসিবির পণ্য পেয়ে খুশি উপকারভোগী পরিবারগুলো। টিসিবিরি কার্ডধারীদের ভাষ্য, নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। বাজারে গিয়ে জিনিসপত্র কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এখন এ কার্ডই ভরসা। একটা কার্ডে কত যে উপকার হয়েছে, তা কাউকে বলে বোঝানো যাবে না।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সালেহা বেগম ছোট পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। বয়স আর রোগের কারণে তার স্বামী এখন আর তেমন একটা ভারি কাজ করতে পারেন না। বাধ্য হয়েই সালেহাকে মানুষের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাতে হয়। গোটা সংসারের বোঝা এখন তার মাথায়। তিনি কার্ডের মাধ্যমে নায্যমূল্যে টিসিবির পণ্য পেয়েছেন। সালেহা বলেন, ‘চারজনের সংসার চালানো আমার জন্য অনেক কষ্টের কাজ। আমাদের নির্দিষ্ট কোনো আয়ের পথ নেই। মানুষের বাড়িতে কাজ করে যা পাই তা দিয়েই সংসারটা কোনো রকম চলে। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে একটা কার্ড পেয়েছিলাম। এখন এই কার্ডই ভরসা। টিসিবির চারটি জিনিস কিনতে ৪৭০ টাকা লেগেছে। বাজারে এগুলো কিনতে গেলে দাম আরও বেশি লাগতো।

টিসিবির কার্ডধারী মর্জিনা খাতুন বলেন, ‘৪৭০ টাকার প্যাকেজে চিনি, মসুর ডাল, ছোলা, দুই লিটার সয়াবিন তেল কিনতে পেয়ে খুব উপকৃত হয়েছি। এটা বাজারে কিনতে গেলে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হতো।’

জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার তৌফিক আজিজ (টিসিবির তত্ত্বাবধায়নকারী) বলেন, এ বছরের ২৭ মার্চ আঞ্চলিক টিসিবির কার্যালয় এ জেলার এক লাখ ৩০ হাজার ৩২৩ পরিবারের জন্য টিসিবির পণ্য দিয়ে দিয়েছে। শুক্রবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরাতলায় নায্যমূল্যে টিসিবি পণ্য বিক্রির মাধ্যমে এ কার্যক্রমের শেষ হয়েছে। এবার অনেক পরিবার চিনি ছাড়ায় নায্যমূল্যে টিসিবির পণ্য কিনেছে। এছাড়াও শিবগঞ্জের শাহবাজপুরের টিসিবির পণ্য নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, সেটার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রমজান উপলক্ষে আবারও কার্ডধারীদের ভর্তুকি মূল্যে ২ এপ্রিল থেকে টিসিবি পণ্য দেওয়া শুরু হবে। ওই পণ্যগুলো জেলায় প্রতিটা ইউনিয়ন ও পৌরসভায় নায্যমূল্যে বিক্রি করা হবে। এবার তেল দুই লিটার, ডাল দুই কেজি ও চিনি এক কেজি দেওয়া হবে। এগুলো আগে নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close