জহুরুল ইসলাম খোকন, সৈয়দপুর (নীলফামারী)

  ৩১ মার্চ, ২০২৩

সৈয়দপুরে রেলের জমি দখল

অনুমোদন ছাড়াই ভবন নির্মাণ করা হলেও নির্বিকার রেলওয়েসহ পৌর কর্তৃপক্ষ

নীলফামারীর সৈয়দপুরে রেলওয়ের জমিতে অবৈধভাবে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ জোরেশোরেই চলছে। শহরের প্রধান সড়কে প্রকাশ্যেই করা হচ্ছে এসব নির্মাণকাজ। অনুমোদন ছাড়াই এ কর্মযজ্ঞ চললেও নির্বিকার রেলওয়ে প্রশাসনসহ পৌর কর্তৃপক্ষ।

শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কেই চলছে একাধিক ভবন নির্মাণকাজ। এর মধ্যে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান নিরিবিলি হোটেল। যা পাকিস্তান আমল থেকেই টিনশেড ছিল। এখন সেখানে করা হচ্ছে ছয় তলা ভবন। প্রায় ১০ শতক জমির ওপর ওই নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। এর সামান্য দূরেই সড়কের বিপরীত পাশে শমশের কটন হাউজের পিছনে আরেকটি পাঁচ তলা ভবন করছে ইউসুফ ব্রাদার্স। এটিও টিনশেড থেকে বহুতল ভবনে রূপান্তরিত করা হচ্ছে। এর আয়তনও প্রায় আট শতক।

এ সড়কেই সাবেক মুক্তিযোদ্ধা অফিস সংলগ্ন আরেকটি স্থাপনা সংষ্কারের নামে সম্প্রতি নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এটি করেছেন রেলওয়ের সাবেক ঠিকাদার মৃত নয়মুল চৌধুরীর ছেলে রেজওয়ান। এর সামান্য উত্তরে আল-আরাফা ব্যাংকের পাশে আরেকটি ভবন করেছে শাওন নামে এক ব্যক্তি। প্রায় আট শতক জমিতে করা হচ্ছে আট তলা ভবন।

এছাড়া জহুরুল হক সড়কে তোফাজ্জল প্রিন্টিং প্রেস সংলগ্ন আরেকটি বহুতল ভবন করা হচ্ছে। এটিও করছে ইউসুফ ব্রাদার্স। এখানেও প্রায় চার শতক জায়গাজুড়ে চলছে নির্মাণকাজ। সড়কটির উত্তর দিকে কলিম মোড় এলাকায় আরো দুটি টিনশেড ভেঙে দুই তলা ও তিন তলা ভবন করা হচ্ছে। পৌর মেয়র ও রাজনৈতিক এক নেতার মদদে এসব বহুতল ভবন নির্মাণকাজ চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

তবে পৌর মেয়র রাফিকা আকতার জাহান বলেন, রেলওয়ের জায়গায় আমরা সব ভবন তৈরির নকশা পাস বা অনুমোদন দেয়নি। তারপরও একাধিক ভবন নির্মান হলে তা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দেখার বিষয়।

এ ব্যাপারে রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি ও স্থাপনা রক্ষণাবেক্ষণ কর্তৃপক্ষের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (আইওডব্লিউ) শরিফুল ইসলাম বলেন, মূলত রেলওয়েন ২.৭৫ একর জমি নিয়ে সৈয়দপুর পৌরসভার সঙ্গে মামলা চলছে। তাই এ বিষয়ে আমাদের কিছুই করার নেই। এটি দেখবে আদালত ও রেলওয়ে স্টেট অফিস। সে কারণে সেখানে হস্তক্ষেপ করা যাচ্ছে না। শহরে রেলওয়ের জমিতে যেসব ভবন নির্মাণ হচ্ছে, সেটি পৌর মেয়রকে ম্যানেজ করে।

এসব বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তা হুসাইন সরিফ জানান, রেলওয়ের জমি নিয়ে রেলওয়ে ও পৌরসভার মধ্যে মামলা চলছে। মামলা চলমান জমিতে স্থাপনা নির্মাণে যদি পৌরসভা নির্দেশ বা নকশা দেয়, তাহলে সেটা হবে অবৈধ।

জানতে চাইলে রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী আহসান উদ্দিন জানান, শহরে রেলওয়ের অনুমোদন না নিয়ে শুধুমাত্র পৌর মেয়রের নির্দেশে দোকানপাট ও বহুতল ভবন নির্মাণকাজ চলছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত কিছুই করা সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close