মো. জহুরুল ইসলাম খোকন, সৈয়দপুর (নীলফামারী)

  ২১ মার্চ, ২০২৩

সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ

৫৯ বছর ধরে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে

শিক্ষার্থীদের জোর করে নয়, আন্তরিকতার সঙ্গে পড়াতে হবে * এই কলেজের ৩৫ শিক্ষার্থী পেলেন মেডিকেলে পড়ার সুযোগ

নীলফামারীর সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ ৫৯ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে। প্রায় প্রতি বছরই এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দেশের নামি-দামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করার সুযোগ পাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরে দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়েছেন ৩৫ জন শিক্ষার্থী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৬৪ সালে দেশের ৪টি শিল্পাঞ্চলে টেকনিক্যাল স্কুল গড়ে ওঠে। এর মধ্যে নীলফামারীর সৈয়দপুরে গড়ে ওঠে সৈয়দপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল। ১৯৭৭ সালে এই স্কুলটি কলেজে উন্নীত হলে নামকরণ করা হয় সরকারি কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ। পরে বিজ্ঞানে সাফল্য অর্জন করায় ২০১৯ সালে নামকরণ করা হয় সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ।

আরো জানা গেছে, সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে ২০১৬ সালে সরকারি মেডিকেল কলেজে ৩৮ জন, ২০১৭ সালে ২৯, ২০১৮ সালে ৩৬, ২০১৯ সালে ৩৮, ২০২০ সালে ৪০ ও ২০২১ সালে ৪০ জন শিক্ষার্থী মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়েছেন।

এই সাফল্যের কারণ জানতে চাইলে কলেজটির অধ্যক্ষ ফারুক আহমেদ বলেন, আমাদের কলেজে রাজনৈতিক প্রভাব নেই। কলহমুক্ত পরিবেশে পাঠদানের সুযোগ রয়েছে। কোনো নোট-গাইড ফলো না করে ক্লাসেই শিক্ষার্থীদের সব বিষয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে বোঝানো হয়। যেভাবে শিক্ষার্থী বুঝতে সুবিধা হয়, সেদিকে লক্ষ রেখেই বন্ধুসুলভ আচরণে পড়াশোনা করানো হয়। এ ছাড়া যাতে পড়াশোনায় মনোযোগী হয়ে নম্বর বেশি পাওয়ার প্রতিযোগিতায় থাকে, সে জন্য ১-২ মাস পরপর পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেসব শিক্ষার্থী দুর্বল, তাদের দিকে সব শিক্ষক ও অভিভাবকের নজর দেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়।

অধ্যক্ষ ফারুক আহমেদ আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের ভয় দেখিয়ে বা চাপ দিয়ে নয়, আন্তরিকতার সঙ্গে বুঝিয়ে পড়াতে পারলেই শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল করবেই। তিনি বলেন, চাপ দিয়ে পড়াশোনা করালে হয়তো ভালো রেজাল্ট হতে পারে কিন্তু মেধাবী হবে না। আর মেধাবী হলে সবখানেই সুযোগ পাবে শিক্ষার্থীরা। তিনি বলেন, তার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের আন্তরিকতার সঙ্গে বুঝিয়ে পড়াশোনার কারণে মেডিকেল কলেজ ছাড়াও ২০১৬ সালে ৬ জন, ২০১৭ সালে ৯, ২০১৮ সালে ১১, ২০১৯ সালে ৬, ২০২০ ১৫, ২০২১ সালে ১৮ ও ২০২২ সালে ১৬ জন শিক্ষার্থী বুয়েটে পড়ার সুযোগ পেয়েছে। এ ছাড়া কুয়েট, চুয়েট ও রুয়েটসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অসংখ্য শিক্ষার্থী পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়েছে।

বিজ্ঞান কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজের শিক্ষকরা আন্তরিকতার সঙ্গে বোর্ড বই থেকে যেভাবে বুঝিয়ে পড়ান, তাতে প্রাইভেট বা নোট-গাইডের প্রয়োজন হয় না। কলেজ শিক্ষকদের বুঝিয়ে পাঠদানের কারণেই শিক্ষার্থীরা ভালো রেজাল্টের পাশাপাশি ডাক্তার, ইনজিনিয়ারসহ দেশের নামি-দামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করার সুযোগ পাচ্ছেন।

এ নিয়ে সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোকছেদুল মোমিন বলেন, সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ হলো সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একটি। ভালো পাঠদান ও ভালো রেজাল্টসহ নামি-দামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করার সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থী তৈরি করা হয় এই প্রতিষ্ঠানে। এর ফলে দেশের সবার নজর কেড়েছে সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close