জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, লালমনিরহাট
উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ১২ জন কারাগারে
* হাতীবান্ধায় তিন প্রকল্প ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্ব * মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের মামলা
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের মামলায় উপজেলা চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুনসহ ১২ জনের জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। রবিবার (১৯ মার্চ) দুপুরে লালমনিরহাট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে-৩ এর বিচারক ইকবাল হাসান তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
জামিন নামঞ্জুর হওয়া অন্য আসামিরা হলেন, মেহেদী হাসান মোহন (২৫), সিপাত হাসান (২২), বিপ্লব চন্দ্র রায় (৩০), মফিজুল ইসলাম, (৪৫) মাসুদ সীকার (২৫), শেখর চন্দ্র (২৫), আরিফ ইসলাম নয়ন (২৮), তৌফিক হাসান তপু (২৫), মো. রুবেল হোসেন (৩৫), জাহিদ হোসেন (২৫) ও নোমান (২২)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, লালমিনরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বরাদ্দের টিআর ও কাবিখা-কাবিটা প্রকল্প ভাগাভাগি নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। সরকারি বরাদ্দের ৮০ শতাংশ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও বাকি ২০ শতাংশ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন উপজেলা পরিষদ। ২০ শাতাংশ পান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও দুজন ভাইস চেয়ারম্যান।
প্রকল্পে উপজেলা পরিষদের বরাদ্দের ২০ শতাংশ ভাগাভাগি নিয়ে ২০২২ সালের ৭ নভেম্বর দুই ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন নাহার ও আনোয়ার হোসেন মিরুর সঙ্গে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুনের বাগবিত-া শুরু হয়। এ সময় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন নাহার উপজেলা চেয়ারম্যানকে গালিগালাজ করতে থাকেন। একপর্যায়ে উপজেলা চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুন অফিস থেকে চলে যান। পরে উপজেলা চেয়ারম্যানের সমর্থকরা এসে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন নাহারের অফিস ভাঙচুর করেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এ ঘটনায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুনকে প্রধান করে আটজনের নামসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৪-১৫ জনের বিরুদ্ধে হাতীবান্ধা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন নাহার। মামলাটি হাতীবান্ধা থানায় নথিভুক্ত না করায় ১৭ নভেম্বর ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন তিনি। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে নিয়মিত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করতে হাতীবান্ধা থানা পুলিশেকে নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে রাতেই হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুনসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি নথিভুক্ত করে পুলিশ।
এ ঘটনায় হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুন ২০ নভেম্বর হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন পান। এরপর নিম্ন আদালতে হাজির হলে আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জামিন মঞ্জুর করেন। মামলার বাদী হাতীবান্ধা জেসমিন নাহার জামিনের বিরুদ্ধে আপিল করেন।
লালমনিরহাট জেলা কোর্ট পুলিশের ইন্সপেক্টর নুরুজ্জামান বলেন, হাতীবান্ধার একটি মামলায় উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ১২ জনের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত।
"