মো. মনিরুজ্জামান, ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম)

  ১৭ মার্চ, ২০২৩

শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্বে এক শিক্ষক সহকারী কর্মকর্তার চার পদই শূন্য

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে জনবল সংকটে প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা বেহাল হয়ে পড়েছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অসুস্থতার কারণে ছুটিতে আছেন। তাঁর দায়িত্ব পালন করছেন একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

এদিকে উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার চারটি পদই বর্তমানে শূন্য। এতে বন্ধ হয়ে গেছে বিদ্যালয়গুলোর পরিদর্শন। ফলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে শিক্ষাদানে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন পাটেশ্বরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সাইফুর রহমান। ৫ মার্চ প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার পদ শূন্য থাকায় পাটেশ্বরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে মো. সাইফুর রহমানকে ডেপুটেশন দেওয়া হলো। তিনি উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ের সহায়তা এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে পরামর্শক্রমে কাজ করবেন। শিক্ষা কার্যালয়ের সামগ্রিক কাজ সম্পাদনের লক্ষ্যে ইউএনওর কার্যালয়ের নির্দেশনায় এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১১২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ৪টি ক্লাস্টারে ভাগ করা হয়েছে। এ জন্য প্রতি ক্লাস্টারে ১ জন করে মোট ৪ জন উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্ব থাকার কথা। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার দুটি পদ শূন্য রয়েছে।

এদিকে আবুল কালাম নামে এক উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীর করা মামলায় আটক হন। পরে জেল থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর প্রায় ৪ মাস ধরে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। ওই কর্মকর্তার বেতন বন্ধ থাকলেও তাঁকে বরখাস্ত করা হয়নি।

এছাড়া জাকির হোসেন নামের আরেকজন উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা বদলি হয়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন কর্মস্থলে যোগ দেন। ফলে ওই দুটি পদও কার্যত শূন্য আছে।

অন্যদিকে কর্মচারীদের ৫ পদের বিপরীতে রয়েছে মাত্র দুজন। এর ফলে প্রশাসনিক কাজকর্মে কার্যালয়ে আসা শিক্ষকরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

এদিকে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা না থাকায় বিদ্যালয়গুলোর পরিদর্শন বন্ধ রয়েছে। এতে উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষাব?্যবস্থায় বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা প্যারালাইসিসে আক্রান্ত। মাসে একবার অফিসে গিয়ে বেতন-বিলে স্বাক্ষর করেন। তার না চাওয়ার কারণে কোনো সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এখানে আসছেন না।

জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা প্রধান শিক্ষক সাইফুর রহমান বলেন, ‘আমার বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার ক্ষতি করে উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।‘ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অসুস্থ, তিনি ছুটিতে রয়েছেন বলে জানান।

অভিযোগ বিষয়ে জানতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যলয়ে গিয়ে ছুটিতে থাকার কারণে জ্যোতির্ময় চন্দ্র সরকারকে পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

জানতে চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপক কুমার দেব শর্মার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও মিটিংয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে এটি সাময়িকভাবে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close