বলরাম দাশ অনুপম, কক্সবাজার

  ১৭ মার্চ, ২০২৩

ইয়াবা পাচার মামলা

কক্সবাজারে তিনজনের যাবজ্জীবন

কক্সবাজারে আলোচিত পাচার মামলায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় শেখ আবদুল্লাহ (১৯) নামে একজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও রায়ে উদ্ধারকৃত ইয়াবা বিক্রির এক কোটি ৭০ লাখ ৬৮ হাজার ৫০০ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল মামলাটির রায় ঘোষণা করেন। আদালতের নাজির বেদারুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলো জহুরুল ইসলাম ওরফে ফারুক (৩৭), নুরুল আমিন ওরফে বাবু (৫৫) এবং আবুল কালাম (৫০)। তাদের বাড়ি কক্সবাজার পৌরসভার উত্তর নুনিয়াছড়ায়। রায় ঘোষণার সময় চার আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ে জহুরুল ইসলাম ও নুরুল আমিনকে পাঁচ লাখ টাকা করে এবং আবুল কালামকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে প্রত্যেককে আরো এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রাষ্ট্র পক্ষের পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম ফরিদ এবং আসামিদের পক্ষের অ্যাডভোকেট ছৈয়দ আলম, অ্যাডভোকেট শাহজালাল চৌধুরী অ্যাডভোকেট নুরুল মোস্তফা মানিক ও অ্যাডভোকেট আবদুল বারী মামলাটি পরিচালনা করেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বেলা ২টার দিকে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশের (গোয়েন্দা বিভাগ) একটি টিম সদর উপজেলার চৌফলদন্ডী-খুরুস্কুল সংযোগ সেতুর উত্তরে ভারুয়াখালী খাল থেকে একটি কাঠের তৈরি বোট আটক করে। বোট থেকে জহুরুল ইসলাম ওরফে ফারুক ও নুরুল আমিন ওরফে বাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে এ সময় রোহিঙ্গা সৈয়দ আলম পালিয়ে যায়। এ সময় বোট তল্লাশি করে ১৪ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী শহরের উত্তর নুনিয়াছড়ার জহুরুল ইসলাম ও তার আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ইয়াবা বিক্রির এক কোটি ৭০ লাখ ৬৮ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে আবুল কালাম এবং তার ছেলে শেখ আবদুল্লাহকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় কক্সবাজার ডিবি পুলিশের ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী সদর থানায় জহুরুল ইসলাম, নুরুল আমিন, আবুল কালাম ও শেখ আবদুল্লাহ এবং অজ্ঞাত আরো ৭-৮ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) কক্সবাজার সদর থানার এসআই এসএম শাকিল হাসান ২০২২ সালের ১২ ডিসেম্বর ৩২ জনকে সাক্ষি করে আমলী আদালতে মামলাটির অভিযোগপত্র জমা দেন।

মামামলায় ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এছাড়া আসামি পক্ষে সাক্ষীদের জেরা, আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন যাচাই, আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্কসহ বিচারের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মামলার রায় ঘোষণার জন্য বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দিন ধার্য করা হয়। কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল তিন আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে উদ্ধারকৃত ইয়াবা বিক্রির এক কোটি ৭০ লাখ ৬৮ হাজার ৫০০ টাকা বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম শাখায় জমা থাকা অর্থ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। চার্জ গঠনের মাত্র ৫২ দিন পর বিচার সব ধাপ সম্পন্ন করে রায় ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান আদালতের নাজির বেদারুল আলম।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close