আবু হাসনাত তুহিন, পবিপ্রবি

  ১৫ মার্চ, ২০২৩

ধুলাবালিতে অতিষ্ঠ পবিপ্রবি

হঠাৎ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে যে কেউ মনে করবে রোদের মাঝেও তীব্র কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) ক্যাম্পাস। বসন্তের আগমনীতে ক্যাম্পাস নতুনভাবে সবুজে সাজলেও ধুলাবালির ছড়াছড়িতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে ক্যাম্পাসের পরিবেশ। বাড়ছে বায়ুদূষণ, ভারী হয়ে উঠছে বাতাস। ধুলাবালিতে নাজেহাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে কমছে অক্সিজেনের মাত্রা, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি।

সরেজমিনে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ফটক থেকে দ্বিতীয় ফটক, টিএসসি থেকে একাডেমিক অথবা সৃজনী বিদ্যানিকেতন থেকে এম কেরামত আলী হল সব জায়গায় যেন ধুলার মহড়া। বাদ যায়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ কেয়ার সেন্টার কিংবা কেন্দ্রীয় মসজিদের সড়ক। এসব সড়কে মাস্ক ছাড়া বের হওয়া কষ্টকর। গত দুদিন ধুলের বিস্তার ঠেকাতে সন্ধ্যার পর পানি ঢালা হলেও সেগুলো যথেষ্ট নয় বলে অভিমত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টদের। মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় বায়ুদূষণ বাড়ছে। ২০১৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর একনেকে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিকতর উন্নয়নের জন্য ৪৫১ কোটি ৪৭ লাখ টাকার প্রকল্প পাস হয়। এ প্রকল্পের আওতায় ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য দুটি বহুতল ভবন, খামারবাড়ি সম্প্রসারণ, সুফিয়া কামাল হলের সম্প্রসারণ, একাডেমিক ভবন নির্মাণ ও সালসাবিল লেকের মাটি ভরাটের কাজ চলছে। নিয়মিত মাটি ও বালু আনা নেওয়া করায় ক্যাম্পাসের রাস্তা মাটি ও বালুতে ঢাকা পড়ে গেছে। ফলে হালকা বাতাস কিংবা যানবাহন চললেই বাতাসে ধুলা ছড়িয়ে পড়ছে। তাছাড়া ক্যাম্পাসের আশেপাশে সড়কের পাশে অনেক খাবারের দোকান রয়েছে। সেগুলো শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় খাচ্ছে। এসব ধুলোবালি যুক্ত অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকির মখে পড়ছেন তারা।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, ক্যাম্পাসের রাস্তাগুলোতে প্রচুর ধুলাবালির কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন তারা। এমনকি রাস্তায় স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করাও মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, নিঃশ্বাসে অক্সিজেনের পরিবর্তে ধুলাবালি গ্রহণ করছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথকেয়ার সেন্টারের চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. এ টি এম নাসিরউদ্দিন বলছেন, গত দুই মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ কেয়ারে আসা শিক্ষার্থীর একটি বড় অংশই ধুলাবালি ও অ্যাজমা সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে আসছে। এসব ধুলাবালি শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের বেশি ঝুঁকিতে ফেলছে। তাছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদেরও আ্যাজমাসহ অন্যান্য রোগের ঝুঁকি রয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন শেখ হাসিনা হলের ঠিকাদার মো. আমীর হোসেন বলেন, ধুলাবালি ও শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টি আমরা জানি। বিষয়টি সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত জানান, ক্যাম্পাসে ধুলাবালির কারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যে সমস্যাগুলো হচ্ছে তা নিয়ে গত রবিবার পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস বিভাগের সভায় আলোচনা হয়েছে। সেখানে ধুলার বিস্তার রোধে কার্যকর পদক্ষেপসমূহ নিয়ে মূল্যায়ন হয়েছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close