গাজী শাহাদত হোসেন ফিরোজী, সিরাজগঞ্জ

  ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

জমে উঠেছে নাটুয়ারপাড়া সরিষার হাট

সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার যমুনা নদীর দুর্গম চরের আশির দশকের ঐহিত্যবাহী নাটুয়ারপাড়া সরিষার হাট জমে উঠেছে। সরিষার বাম্পার ফলন আর দামে খুশি কৃষকরা। অপরদিকে প্রচুর আমদানি আর ভালো বাজারদরে খুশি দূর-দূরান্ত থেকে আসা বেপারিরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় ৬৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে। জেলায় এ মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সাড়ে তিন হাজার বেশি জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে।

নাটুয়ারপাড়া হাট কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৬ সালে যমুনা নদীর তীরে গড়ে ওঠে এই হাট। সপ্তাহে প্রতি শনিবার ও বুধবার বসে গবাদি পশু, সরিষা সহ নানা ফসলের হাট। এই হাটের সরিষার মান ও দাম ভাল হওয়ায় ইঞ্জিন চালিত নৌকায় করে জামালপুরের সরিষাবাড়ি, বগুড়ার সারিয়াকান্দি, ধুনট, শেরপুর, জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে সরিষা ক্রয় বিক্রয় করতে ক্রেতা বিক্রেতারা আসে এ হাটে।

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার আলাকান্দি এলাকার সরিষার বেপারি বিপ্লব হোসেন বলেন, অন্যান্য হাটের তুলনায় নাটুয়ারপাড়া হাটে প্রচুর সরিষার আমদানি হয়। এ হাট থেকে সরিষা কিনে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় করে নিয়ে যেতে হয়। এতে পরিবহন খরচ অনেক কম লাগে। শনিবারের হাটে ৬০ মণ সরিষা কিনেছি।

কাজীপুরের নাটুয়ারপাড়া এলাকার সরিষার বেপারি মিলন সরকার বলেন, নাটুয়ারপাড়া হাটে সরিষা, ভুট্টা, বাদামের প্রচুর আমদানি হয়। আমি সরিষা কিনে বাধাই করে পড়ে বিক্রি করি। শনিবারের হাটে আমি ২০০ মণ সরিষা কিনেছি। বর্তমানে সরিষার মান ও শুকনো ভেদে ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে কিনছি।

একই এলাকার সরিষা চাষি আব্দুস সালাম বলেন, রবি মৌসুমে সরিষা আবাদ করে উৎপাদিত সরিষা মৌসুমের সময় অল্প বিক্রি করে কিছুদিন পর সব বিক্রি করি। এতে মৌসুমের চেয়ে কিছুটা দাম বেশি পাওয়া যায়। এবছর আমি ৬ বিঘা জমিতে উন্নত জাতের সরিষার আবাদ করেছি। সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারদরও অনেক ভালো।

এই হাটের ইজারাদার আব্দুর রহিম বলেন, নাটুয়ারপাড়া হাটের সরিষার গুণগত মান ভালো হওয়ায় সারা বছর এই হাটে ক্রেতা বিক্রেতারা সরিষা ক্রয় বিক্রয় করতে আসেন। হাটে বর্তমানে দুই হাজার মণের ওপরে সরিষা ক্রয় বিক্রয় হয়েছে। যা আগামী সপ্তাহের মধ্যে প্রায় ৫ হাজার মণ ছারিয়ে যাবে।

কাজীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, রবি মৌসুমে উপজেলায় এক হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে দেড় মেট্রিক টন ভুট্টা উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে রবি মৌসুমে ১ হাজার ৭২৫ মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকা ও কৃষি বিভাগের সঠিক পরামর্শ নিয়ে কৃষকরা সরিষার আবাদ করায় বাম্পার ফলন হয়েছে। চরাঞ্চল হওয়ায় নদী পথে জামালপুর, বগুড়া সহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে সরিষা ক্রয় বিক্রয় করতে ক্রেতা বিক্রেতারা আসে নাটুয়ারপাড়া হাটে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close