এস এম রাফি, চিলমারী (কুড়িগ্রাম)

  ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

ফাইলবন্দি চিলমারী ক্রীড়া সংস্থা

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে নামেই উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা থাকলেও বাস্তবে এর কোনো কার্যক্রম নেই। সংস্থাটিরও নেই কোনো ঠিকানা। সৃষ্টি লগ্ন থেকে দুই ব্যক্তি সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ক্রীড়া অনুরাগীদের অভিযোগ, কাগজে কলমে সংস্থাটির অস্তিত্ব থাকলেও বাস্তবে এর কোনো কার্যক্রম নেই। তবে ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ হোসেন আনসারী বলেন, আর্থিক সংকটের কারণে টুর্নামেন্ট ব্যতিত খেলার আয়োজন করার সুযোগ হয় না। ২০০০ সালের পর কমিটি গঠন করা হয়েছিল, কাগজ না দেখা পর্যন্ত বলতে পারবেন না বলে জানান তিনি।

জানা গেছে, চিলমারীর ক্রীড়াঙ্গনকে এগিয়ে নিতে ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় চিলমারী উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা। পদাধিকারবলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হলেন ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি। গঠনতন্ত্রে স্থানীয় ও বিভিন্ন সরকারী বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে ৪ বছর পরপর কমিটি করার বিধান রয়েছে। সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাকালে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয় ওবাইদুল হক খাঁজাকে। তিনি ২০০০ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এরপর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেন উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ হোসেন আনসারী। বর্তমানে তিনি উলিপুর উপজেলা থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। যার প্রভাব পরেছে সংস্থার কার্যক্রমে। দীর্ঘদিন ধরে একই ব্যক্তিকে স্বপদে রেখে কমিটি গঠন করায় মুখ থুবড়ে পড়েছে সংস্থাটি।

স্থানীয় ক্রীড়ানুরাগীদের অভিযোগ, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা খেলাধুলায় সম্পৃক্ত হতে না পারায় চিলমারীর ক্রীড়াঙ্গন হারাচ্ছে তার নিজস্বতা। আগ্রহ আর উদ্দীপনা হারিয়ে খেলাধুলা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে ক্রিড়ামোদি তরুণেরা। তরুণ ও যুব সমাজ দিনের পর দিন মোবাইল গেমস ও মাদকের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ক্রীড়া সংস্থাটির যথাযথ পদক্ষেপের অভাবে নেই কোনো মানসম্মত মাঠ। চিলমারী সরকারি কলেজ মাঠে উপজেলার ক্রীড়াযজ্ঞের বেশির ভাগ আয়োজন করা হলেও বর্তমানে মাঠটির বেহাল দশা। খানাখন্দে ভরা মাঠের উত্তর ও পূর্ব দিকের দু’পাশে ভাঙ্গন, মাঠের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। মাঠটিতে গরু ছাগলের অবাদ বিচরণ।

মাঠটি এলাকার তরুণ সমাজ নিজেরা চাঁদা দিয়ে কোনো রকমে খেলার উপযোগী করলেও প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। এছাড়া কলেজটি পরীক্ষা কেন্দ্র হওয়ায় বছরের অধিকাংশ সময় মাঠে গড়াতে পারে না কোনো খেলা। জাতীয় পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল অথবা জেলা ক্রীড়া সংস্থার উপজেলা ভিত্তিক কোনো আয়োজন থাকলে কিছুটা সময় সচল থাকে সংস্থাটি। এ কারণে মাঠ পর্যায়ে উঠে আসা নতুন প্রতিভাবান ক্রীড়াবিদরা হারিযে যান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খেলোয়াড়রা বলেন, খেলোয়াড় নির্বাচনে ক্রীড়া সংস্থা সংশ্লিষ্টরা স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নেন। এতে প্রতিভাবান অনেক খেলোয়ার সুযোগ না পেয়ে হারিয়ে যান। এছাড়াও উপজেলা পর্যায়ে খেলাধুলায় দেওয়া হয় নিম্নমানের পুরস্কার।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ক্রীড়া সংস্থার বিষয়ে আমার ধারণা নেই, যদিও আমি পদাধিকার বলে সভাপতি। আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখবো। তারপর কমিটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রুকুনুজ্জামান বলেন, খেলাধুলায় সম্পৃক্ততা বাড়াতে ক্রীড়া সংস্থা ঢেলে সাজানো হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close