রবিউল আলম ইভান, কুষ্টিয়া

  ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩

আপন ঘরেই আশ্রয়হীন

কুষ্টিয়ার খোকসায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়েও হারুন অর রশিদ নামে এক ব্যক্তির থাকার জায়গা হয়েছে ঘরের বারান্দায়। শীত হোক অথবা গরম, রোদ কিংবা ঝড়-বৃষ্টি এভাবে মাসের পর মাস বসবাস করছেন বারান্দায়। আর ঘরে বসবাস করছেন মন্টু বেপারী নামে স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি। রাজকীয় খাট পালং থেকে শুরু করে সব কিছুই আছে ঘরটিতে। রীতিমত আয়েশী জীবনযাপন করছেন তিনি। ঘটনাটি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার সাতাপাখিয়া গ্রামে। এ নিয়ে জেলাজুড়ে তোলপাড় শুরু হলেও এখন পর্যন্ত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যদিও স্থানীয় প্রশাসন বলছে, এরই মধ্যে ঘরটি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত মন্টু বেপারীর বিরুদ্ধে নেওয়া হয়েছে ব্যবস্থা।

জানা গেছে, প্রায় ১০ মাস আগে খোকসা উপজেলার সাতপাখিয়া গ্রামে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ১৩টি ঘর নির্মাণ করে স্থানীয় প্রশাসন। যা যাচাই বাছাই করে অসহায় হতদরিদ্র মানুষের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়। তুলে দেওয়া হয় ঘরের চাবি। তাদেরই একজন ৮০ বছরের বয়স্ক হারুন-অর রশিদ। কিন্তু আর সবাই ঘরে উঠলেও ঘরে থাকার ভাগ্য জুটেনি তার। স্থানীয় প্রভাবশালী মন্টু বেপারী সেই ঘরের দখল নিয়ে স্বপরিবারে আয়েশী জীবনযাপন করছেন। আর তার ঠাঁই হয়েছে তার নামে বরাদ্দকৃত ওই ঘরের বারান্দায়। প্রায় ১০ মাস ধরেই ঘরের বরান্দায় যুদ্ধ করেই বসবাস করে আসছেন তিনি।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য বাদশা জানান, মন্টু বেপারী ঘরের মালিক না হয়েও বৃদ্ধ অসহায় হারুন-অর রশিদের নামে বরাদ্দকৃত ঘরে বসবাস করে আসছেন। আর ঘরের মালিক হারুন-অর রশিদ বসবাস করছেন বারান্দায়।

ঘরের প্রকৃত মালিক বৃদ্ধ হারুন অর রশিদ জানান, আমাকে দুবেলা খাবার দিচ্ছে মন্টুর পরিবার। এ কারণে ওরা আমার কাছ থেকে স্ট্যাম্পে লিখে নিয়েছে ঘরটি। আমি এখন বারান্দায় থাকি। কষ্ট হলেও থাকি।

তবে এ বিষয়ে মন্টু বেপারীকে পাওয়া না গেলেও তার স্ত্রী মুসলিমা খাতুন জানান, এর আগের ইউএনও আমাদের একটি ঘর দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তা দেয়নি। আমাদের জমির পাশেই হারুন-অর রশিদের ঘর। তিনি বৃদ্ধ মানুষ। তাকে আমরা তিনবেলা খাবার দিই। তার সম্মতিতেই আমরা স্ট্যাম্প করে লিখে নিয়েছি। খোকসা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম রেজা আমাদের সাহায্য করেছেন। তার পরামর্শেই আমরা ঘরটি স্ট্যাম্পে লেখালেখি করে নিয়েছি।

যদিও এ বিষয়ে খোকসা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম রেজা বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্প দখলের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতেই একটি চক্র মিথ্যা রটনা রটিয়েছে।

তবে এ বিষয়ে খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি আমলে নিয়ে এরই মধ্যে মন্টু বেপারীকে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। আমরা তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নিয়েছি। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর কারো দখলে নেওয়ার সুযোগ নেই। বিষয়টি আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে মনিটরিং করছি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close