সিরাজুল ইসলাম আপন, ভাঙ্গুড়া (পাবনা)

  ২২ জানুয়ারি, ২০২৩

অবৈধ করাতকলে বনের সর্বনাশ

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় সরকারের অনুমোদন ছাড়াই প্রায় অর্ধশত করাতকল চলছে। এসব করাতকলে সাবাড় হচ্ছে বনজ, ফলদসহ নানান প্রজাতির গাছ। অনুমোদনহীন এসব করাতকলে মাসের পর মাস চলছে কাঠ কাটার কাজ। এ ফলে একদিকে যেমন পরিবশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে অপরদিকে সরকার প্রতি বছর হারাচ্ছে মোটা অঙ্কের রাজস্ব।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বন আইনে কোনো করাতকল মালিক লাইসেন্স না নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে না। লাইসেন্স নেওয়ার পর থেকে প্রতি বছর তা নবায়ন করতে হবে। উপজেলা বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার একটি পৌরসভাসহ ছয়টি ইউনিয়নে অর্ধশতাধিক করাতকল রয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি করাতকলের লাইন্সেস রয়েছে। কিন্তু সেগুলির নবায়নও হয় না ঠিকমত। আর বাকি প্রায় অর্ধশত করাতকলের নেই কোনো অনুমোদন বা লাইন্সেস। ফলে নবায়নের প্রশ্নই আসে না।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বাজারগুলোর করাতকল ঘুরে দেখা গেছে, কেউ বা জায়গা ভাড়া নিয়ে কেউ বা নিজস্ব জায়গায় যত্রতত্র করাতকল স্থাপন করে বছরের পর বছর চালাচ্ছে তাদের ব্যবসা। মিল চালানোর ক্ষেত্রে সরকারের সুনির্দিষ্ট বিধান থাকলেও এ উপজেলায় চিত্র একেবারেই বিপরীত। এসব মিলের কোনো কোনো মালিক ২০-২৫ বছর ধরে অনুমোদন ছাড়াই চালাচ্ছেন তাদের করাতকল। লাইসেন্সবিহীন করাতকলগুলো এ উপজেলায় বন্ধ করার কোনো উদ্যোগও চোখে পড়েনি। তবে এসব মিল চত্বরে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ মজুত করে রাখা হয়েছে। কাক ডাকা ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত এসব মিলে বিরামহীন চলছে কাঠ কাটার কাজ।

খানমরিচ ইউনিয়নের ময়দান দীঘি এলাকার করাতকল মালিক আজিজ ও জলিল মেধা জানান, অনুমোদনবিহীন দীর্ঘদিন ধরে তারা তাদের করাতকল চালাচ্ছেন। এতে কোনো সমস্যা হয়নি। কেউ লাইন্সেস করার বিষয়ে কখনও কিছু বলেননি। বললে হয়ত লাইন্সেস করার উদ্যোগ নেওয়া হত। কালিবাড়ি এলাকার করাতকল মালিক নিজাম উদ্দীন বলেন, দীর্ঘদিন আমাদের করাতকল চলছে। অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছি এখনও অনুমোদন পায়নি। মিল যখন চালু করেছি তা তো বন্ধ রাখতে পারি না।

এ ব্যাপারে উপজেলা বন বিভাগের ফরেস্টার মো. জাহিদ হাসান বলেন, মাঝে মঝে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানার পাশাপাশি সর্তক করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন, অবৈধ করাতকলের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। প্রয়োজনে আবারও অভিযান পরিচালনা করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close