আখলাছ আহমেদ প্রিয়, হবিগঞ্জ
হবিগঞ্জ মুক্ত দিবস আজ
মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধে হানাদার বাহিনী পিছু হটে
আজ ৬ ডিসেম্বর, হবিগঞ্জ মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল প্রতিরোধের মুখে হানাদার বাহিনীর সদস্যরা হবিগঞ্জ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। মুক্ত হয় এ জেলা। এই দিনে আব্দুস শহীদের নেতৃত্বে ৩৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রথম শহরে প্রবেশ করে অস্ত্র উচিয়ে হবিগঞ্জকে মুক্ত ঘোষণা করেন।
১৯৭১ সালে সারা দেশকে মুক্তিযুদ্ধের ১১টি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়। সিলেট জেলার হবিগঞ্জ মহকুমা, কিশোরগঞ্জ মহকুমা, আখাউড়া-ভৈরব রেললাইন থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে কুমিল্লা ও ঢাকা জেলার অংশবিশেষ নিয়ে ছিল ৩ নম্বর সেক্টর। এই সেক্টরের দায়িত্ব পালন করেন মেজর শফিউল্লাহ। ডিসেম্বরের শুরুতে মুক্তিবাহিনী জেলা শহরের কাছাকাছি পৌঁছায়। ৫ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা হবিগঞ্জ শহরে প্রবেশ করলে তাঁর নেতৃত্বে পাকিস্তানিদের সঙ্গে হবিগঞ্জের সীমান্ত এলাকার দুর্গম অঞ্চলগুলোতে মুক্তিযোদ্ধাদের তুমুল যুদ্ধ হয়। যে কারণে ৬ ডিসেম্বর ভোরে পাকিস্তানি সেনাসহ রাজাকাররা শহর ছেড়ে পালিয়ে যায়।
পরে ওই দিনই সকাল ৮টায় হবিগঞ্জ শহরে হবিগঞ্জ মুক্ত দিবস ঘোষণা করেন বর্তমান হবিগঞ্জ সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. আব্দুস শহীদ। শহরবাসী মুক্তিযোদ্ধাদের অভিবাদন জানায়। তারা জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে মুক্ত হবিগঞ্জ শহরের রাস্তায় নেমে বিজয়ের উল্লাস করেন।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা প্রাতিষ্ঠানিক সন্তান কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক শাহ জয়নাল আবেদীন রাসেল বলেন, ‘আমার বাবা শাহ মঞ্জব আলী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন। আমাদের দাবী সকল মুক্তিযোদ্ধার কবর চিহ্নিত করে সরকারী ভাবে সংরক্ষণ করার উদ্যোগ নেয়া হউক।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা রফিক বলেন ‘৬ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলেন। এতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সদস্যরা হবিগঞ্জ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। পরে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস শহীদের নেতৃত্বে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা হবিগঞ্জ মুক্ত ঘোষণা করেন।’
মুক্তিযোদ্ধা মিয়া মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে হবিগঞ্জের ২৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এতে আহত আরো ৩৭ জন মুক্তিযোদ্ধা। এখনও অনেক মুক্তিযোদ্ধার কবর চিহ্নিত বা সংরক্ষণ করা হয়নি। আমাদের দাবি, হবিগঞ্জ মুক্ত দিবসটি সরকারিভাবে পালন করা হোক এবং দ্রুত সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের কবর চিহ্নিত করে সেগুলো সংরক্ষণ করা হোক।’
হবিগঞ্জ সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুস শহীদ বলেন, ২৮ নভেম্বর পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে তুমুল য্দ্ধু করি এবং প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলি। এতে পাকিস্তানি বাহিনী হবিগঞ্জ ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়।
"