মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে রবিশস্য ও বোরো মৌসুমে প্রতি বছরই চাষের আওতায় আসছে পতিত জমি। ফসল উৎপাদন বাড়ানোর জন্য কৃষকেরা একইসঙ্গে এক ফসলি জমিকে দুই ফসলি, তিন ফসলি জমিতে রূপান্তর করছেন। এ ছাড়া যেসব জমি বা জলাশয় কখনও চাষ করা হয়নি এসব জমিতে শুষ্ক মৌসুমে ফসল উৎপাদন করা হচ্ছে।

কৃষকেরা জানান, ফসল উৎপাদন বাড়ানোর জন্য পতিত জমিতে বিভিন্ন সবজি চাষ করছেন। বিশেষ করে রবিশস্য ও বোরো ধান চাষ হচ্ছে। পর্যাপ্ত সেচের ব্যবস্থা ও সরকারি প্রণোদনা প্রদান করলে আরও পতিত জমি চাষের আওতায় আনা সম্ভব। এ ছাড়া এক ফসলি জমিতে তিন ফসলি জমিতে রূপান্তর করে সবজি ও বিভিন্ন জাতের ধান চাষ করছেন বলে তারা জানান।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৭-১৮ মৌসুমে উপজেলায় বোরো ধান চাষ করা হয়েছে তিন হাজার ৯৪০ হেক্টর, সরিষা ৮৫ হেক্টর, সবজি এক হাজার ৩২০ হেক্টর ও আলু ৪৯০ হেক্টর। যা পাঁচ বছরের ব্যবধানে ২০২১-২২ মৌসুমে ৫৭০ হেক্টর বেড়ে বোরো ধান চার হাজার ৫১০ হেক্টর চাষ করা হয়। একইসঙ্গে সরিষা ৩০ হেক্টর বেড়ে ১১৫ হেক্টর, সবজি ২৬০ হেক্টর বেড়ে ১৫৮০ হেক্টর এবং আলু ৩৫ হেক্টর বেড়ে ৫২৫ হেক্টর জমিতে চাষ করা হচ্ছে।

সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, গত কয়েক বছর ধরে কৃষকেরা সবজি ও বোরো ধানের প্রতি ঝুঁকছেন। তারা বিভিন্ন পতিত জমিতে সরিষা, আলু, সবজি চাষ করছেন। এ ছাড়া বোরো ধানের বীজতলার জন্য পতিত জলাশয় প্রস্তুত করছেন। কৃষিতে খরচ বাড়লেও সারা বছর সবজিতে ভালো দাম পাওয়া যায়। এজন্য পতিত জমিসহ সব জমিতে চাষ বেড়েছে।

কৃষক কালা মিয়া বলেন, আমি গত তিন বছর ধরে এক একর জলাশয়ে বর্ষা মৌসুমে মাছের সঙ্গে ধান আর শুষ্ক মৌসুমে সবজি চাষ করছি। অথচ এ জমিগুলো কয়েক বছর আগেও পতিত ছিল। একই উপজেলার কৃষক জহুর মিয়া বলেন, আমি আগে আমার জমিতে শুধু আমন ধান চাষ করতাম। আমন চাষ করে আমার পরিবারের খাদ্যের চাহিদায় ঘাটতি থাকতো। পরে একই জমিতে গত তিন বছর ধরে আউশ, আমন ও বোরো ধান চাষ করছি। এখন পরিবারের খাদ্যের চাহিদা পূরণ হয়ে বাজারে ধান বিক্রি করি।

এ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জনি খান বলেন, গত কয়েক বছর ধরে এ উপজেলায় অনেক পতিত জমি চাষের আওতায় এসেছে। পর্যাপ্ত সেচ থাকলে আরও পতিত জমি চাষের আওতায় আসবে। কৃষকেরা পতিত জমিতে সরিষাসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করছেন।

"