মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
নিম্নমানের চাল ফেরত নিলেন খাদ্য কর্মকর্তা
নেত্রকোনার মদনে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির নিম্নমানের চাল ডিলারের কাছ থেকে ফেরত নিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা আবু সালেক। বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য চাল ভর্তি ট্রাক মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) রাতের আঁধারে তিনি নিজেই সরিয়ে নেন। তবে অন্যান্য ডিলার এসব চাল বিতরণ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেননি ইউএনও তানজিনা শাহরীন।
মদন উপজেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় নেত্রকোনার মদন উপজেলায় দুই হাজার ৬৮৮ জন সুবিধাভোগী রয়েছেন। এর বিপরীতে আটটি ইউনিয়নে ১৬ জন ডিলার রয়েছেন। একজন সুবিধাভোগী প্রতি মাসে ১৫ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল পাচ্ছেন। প্রতি ৩০ কেজি চালের বস্তায় তিন কেজি পুষ্টি জাতীয় উপকরণ মিশ্রিত থাকার নিয়ম রয়েছে। ৩০ কেজি চালের বস্তায় পুষ্টি জাতীয় উপকরণ মিশ্রনের দায়িত্ব দেওয়া হয় নেত্রকোনার এ আর খান পাঠান অটো রাইস মিল নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে।
অভিযোগ উঠেছে, নেত্রকোনার এ আর খান পাঠান অটো রাইস মিল ও মদন উপজেলার ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা আবু সালেকের যোগসাজোসে নিম্নমানের চাল (পোকা মিশ্রিত) ডিলারদের কাছে হস্তান্তর করেছেন। এর সঙ্গে ৩০ কেজি চালের বস্তায় কোনো রকম পুষ্টি জাতীয় উপকরণ মিশ্রণ করা হয়নি। পুষ্টি মিশ্রণ ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে সুবিধাভোগীদের মাঝে চাল বিক্রি করছেন ডিলাররা।
মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের বারড়ী গ্রামের ডিলার বীর মুক্তিযোদ্ধা ছদ্দু মিয়ার গুদামে ৩৫৭ জন সুবিধাভোগীর চাল পাঠানো হয়।
খবর পেয়ে মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে বাড়রী গ্রামের ডিলার বীর মুক্তিযোদ্ধা ছদ্দু মিয়ার গুদামে গেলে দেখা যায়, তাড়াহুড়ো করে ডিলারের গুদাম থেকে নিম্নমানের চাল লোকজন নিয়ে ট্রাকে বোঝাই করছেন মদন ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা আবু সালেক। বিষয়টি তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানজিনা শাহরীনকে জানানো হলেও তিনি ব্যবস্থা নেননি। কিছুক্ষণ পরে চাল ভর্তি ট্রাক নিয়ে উধাও হয়ে যান খাদ্য কর্মকর্তা আবু সালেক।
ডিলার বীরমুক্তিযোদ্ধা ছদ্দু মিয়া জানান, পুষ্টি মিশ্রিত না করে আমার গুদামে পোকাযুক্ত নিম্নমানের চাল পাঠানো হয়। পরে রাতে খাদ্য কর্মকর্তা ট্রাকে করে চালের বস্তাগুলো নিয়ে যান।
এ ব্যাপারে এ আর খান পাঠান অটো রাইস মিলের মালিক এইচ আর খান পাঠান সাকি জানান, মদনে চাল পাঠানো হয়েছে কি না তা আমার জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
নিম্নমানের চালের বিষয়টি নিশ্চিত করে মদন ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা আবু সালেক বলেন, পুষ্টি মিশ্রণের জন্য আমরা গুদাম থেকে ভালো মানের চাল নেত্রকোনা এ আর খান পাঠান অটো রাইস মিলে পাঠিয়েছি। কিন্তু কোনো রকম পুষ্টি না মিশিয়ে নিম্নমানের চাল ডিলারের কাছে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে অনুরোধ জানান তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানজিনা শাহরীন জানান, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির নিম্নমানের চালের বিষয়টি আমি শুনেছি। এ বিষয়ে খাদ্য কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে।
"