আখলাছ আহমেদ প্রিয়, হবিগঞ্জ

  ২৮ নভেম্বর, ২০২২

স্বাস্থ্যসেবায় পিছিয়ে শায়েস্তাগঞ্জ

পাঁচ বছরেও চালু হয়নি প্রস্তাবিত ৫০ শয্যার হাসপাতাল জীর্ণ উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চলছে নিয়মরক্ষার কার্যক্রম

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে প্রস্তাবিত ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পাঁচ বছরেও চালু হয়নি। যে কারণে চিকিৎসা সেবায় দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে উপজেলাটি। অন্যদিকে উপজেলার উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সাধারণ রোগীদের নিয়মরক্ষার চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হচ্ছে। ফলে পর্যাপ্ত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন উপজেলার দেড় লক্ষাধিক মানুষ। এছাড়া সম্প্রতি প্রস্তাবিত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নতুন তত্ত্বাবধায়ক ও চারজন মেডিকেল অফিসার নিয়োগ দেওয়া হলেও তারা দায়িত্ব পালন করছেন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। তবে রোগীদের খাদ্য, চিকিৎসা সামগ্রী ও নিয়মিত ওষুধ সরবরাহ না থাকায় সেবা দিতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।

জানা যায়, ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাবিত ৫০ শয্যা শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফ মিলে ৪৭টি পদের প্রস্তাব করা হয়। স্থানীয়রা জানান, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার আয়তন প্রায় সাড়ে ৩৯ বর্গ কিলোমিটার। যার মাঝে রয়েছে একটি পৌরসভা ও তিনটি ইউনিয়ন। শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠায় ব্যস্ততম স্থান হিসেবে বিভিন্ন এলাকার মানুষের পদচারণায় মুখরিত উপজেলাটি। তাছাড়া স্থানীয় দেড় লক্ষাধিক মানুষের জন্য উপজেলায় একটি মাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স না থাকায় প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ রোগীরা। এ অবস্থায় শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার এক একর জমির উপর অবস্থিত শায়েস্তাগঞ্জ উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চলছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কার্যক্রম। এতে প্রতিদিন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও), তত্ত্বাবধায়ক ও চারজন মেডিকেল অফিসার দায়িত্ব পালন করছেন। কেউ অসুস্থ হলে উপজেলা উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে সেখানে প্রাথমিক সেবা দেওয়া হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা মইনুল হাসান রতন বলেন, শিল্পাঞ্চল হিসেবে এখন পরিচিত শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা। তবে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত রয়েছে উপজেলাটি। প্রাথমিক চিকিৎসা ছাড়া এখানে কোনো সেবা মিলে না। সরকার ঘোষিত ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি দ্রুত চালু করা জরুরি।

চিকিৎসা নিতে আসা সিমা খাতুন বলেন, অসুস্থ হলেই জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে চলে যেতে হয়। সামান্য জ্বরে আক্রান্ত হয়ে এখানে এসেছি। কিন্তু এখানে পর্যাপ্ত চিকিৎসা না থাকায় চলে যেতে হচ্ছে।

চিকিৎসকরা জানান, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতিদিন ৫০-৬০ জন রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নিয়মিত ওষুধ সরবরাহ থাকলে প্রতিদিন গড়ে দেড়শ থেকে দুইশ রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হয়। পর্যাপ্ত ওষুধ না থাকায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। মেডিকেল অফিসার ডা. ফাতেমা আক্তার নিশি বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবন নির্মাণ না হওয়ায় উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চলছে এর কার্যক্রম। এতে ইউএইচএফপিও, তত্ত্বাবধায়ক ও আমরা চারজন মেডিকেল অফিসার নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছি। প্রতিদিন গড়ে ৭০-৮০ জন সাধারণ রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে খাদ্য ও চিকিৎসা যন্ত্রপাতি না থাকায় গুরুতর রোগীদের জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, টিনশেডে নির্মিত উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এখন রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আমরা প্রতিদিন রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করছি। তবে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় প্রতিদিন চিকিৎসকদের বসতে কষ্ট হচ্ছে। বর্তমানে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ থাকায় প্রযোজনীয় চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। যদিও ওষুধের চাহিদাপত্র স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ তালুকদার ইকবাল বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবণ নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close