রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

  ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২

রৌমারীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন হুমকিতে কোটি টাকার সেতু

কুড়িগ্রামের রৌমারীর জিঞ্জিরাম, সোনাভরি, হলহলিয়া ও ব্রহ্মপুত্র নদে অবৈধ ভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছে একটি অসাদুচক্র। স্থানীয় প্রশাসনের অবহেলায় চক্রটি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের ফলে নদের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। হুমকিতে রয়েছে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু।

এছাড়া ভাঙন হুমকিতে রয়েছে গোটা উপজেলায় প্রায় ৪টি নদের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২৫টি গ্রাম, ৭টি সেতু, ৩টি মসজিদ, একটি শ্মসানঘাট ও প্রায় ৫ শতাধীক হেক্টর জমি। এনিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষে যাদুরচর চাক্তাবাড়ি গ্রামের আব্দুল্লাহ, গোলাবাড়ি গ্রামের আমিনুল ইসলাম বাবলু, খনজনমারা গ্রামের নুরুল আরমি ও বামনেরচর গুচ্ছগ্রামের বকুলসহ বিভিন্ন দপ্তরে একাধীকবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এছাড়া ফৌজদারী আদারতে অর্ধশতাধীক ড্রেজার মালিক ও শ্রমিকে আসামি করে একটি মামলা চলমান রয়েছে। এরপরেও অসাদু ডেজার মালিকরা প্রশাসনসহ বিভিন্ন জনকে ম্যানেজ করে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছে। ফলে একদিকে যেমন বাড়িঘর, রাস্তাঘাট হুমকিতে রয়েছে। অপরদিকে পরিবেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জিঞ্জিরাম, সোনাভরি, হলহলিয়া ও ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন স্থানে শতাধীক ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছে একটি চক্র। এ চক্রের মধ্যে রয়েছে কুটিরচর খানপাড়া গ্রামের আ. রহিমের ছেলে ছবির খান, বাবুল খান, ছরমান খান, দিগলাপাড়া গ্রামের কামাল উদ্দিন, ধনারচর গ্রামের সুরুজ্জামাল, বাইমমারী গ্রামের আফসার, এরশাদুল, আতিক, খনজনমারা গ্রামের রফিকুল ইসলাম আরমি, সোনা উল্লাহ, দুবলাবাড়ি গ্রামের ইক্রাহিম, জন্দিরকান্দা গ্রামের মোজাফ্ফরের ছেলে বাবু মিয়া ও বোল্লাপাড়া গ্রামের নুরনবীসহ অনেকেই। ফলুয়ার চর গ্রামের ফরহাদ আলী অভিযোগ করে বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাঘমারা, ফলুয়ার চর, কুটিরচর, যাদুর চর, পাখিউড়া, বকবান্দা, চরেরগ্রাম, কোমড়ভাঙ্গিসহ ৮টি গ্রাম বিলিন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

কুটিরচর গ্রামের লালচান মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ঘরে আমার অসুস্থ মা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। অথচ বাড়ির পাশে দিনরাত শ্যালো মেশিন চলে। অভিযোগ দিয়েও লাভ হয় না।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক বাড়ির মালিক বলেন, আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর ড্রেজার বন্ধের জন্য অভিযোগ দিয়েছি কোন কাজ হয়নি। অপর দিকে ড্রেজার মালিক ও বালু ব্যবসায়ী আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে।

এদিকে অভিযুক্ত বালু ব্যাবসায়ী বাবুল খান, ছরমান খান, কামাল উদ্দিন, সুরুজ্জামাল, আফসার, এরশাদুল, আতিক, রফিকুল ইসলাম আরমি, সোনা উল্লাহ, ইব্রাহিম এবং ট্রাক মালিক কামাল হোসেন, রিপন হোসেন, গোলাম হোসেন কাদের হোসেন বলেন, জমি ভেঙে নদী হইতেছে দোষ নাই। আমরা কেটে বিক্রি করলে দোষ।

এ ব্যাপারে বন্দবেড় ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কবীর হোসেন বলেন, বালু উত্তোলনকারি ও বালু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটটি খুবই শক্তিশালি। কোনক্রমেই তাদেরকে দমন করা যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে জানতে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রবন আখতারের মুঠোফোনে একাধীকবার কল করা হলেও তিনি রিসিপ করেননি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close