জাহিদুল হক মনির, শেরপুর

  ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২

শেরপুরে ‘ব্ল্যাক সোলজার ফ্লাই’ চাষে সাফল্য

শেরপুরে চাষ হচ্ছে ‘ব্ল্যাক সোলজার ফ্লাই’ বা প্যারেট পোকা খ্যাত এক প্রজাতির মাছি। এটি মাছ ও মুরগীর একটি উৎকৃষ্ট মানের প্রাকৃতিক খাদ্য। ইউটিউব দেখে প্রথমবারের মত প্যারেট পোকা শেরপুরের নকলার নারায়ণখোলার সফিকুর ও জেসমিন দম্পতি চাষ শুরু করে। এই প্রজাতির মাছি চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন তারা। মাছ, মুরগীর খাদ্য সংকট দূরীকরণে এই প্রাকৃতিক খাদ্য ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বলে আশা তাদের। এছাড়াও আরো অনেকে আগ্রহী হচ্ছে এই প্রজাতির মাছি চাষ করতে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্যারেট পোকার খামারে কাজ করছেন শফিক। আর তার স্ত্রী তাদের পালিত মুরগিকে খাওয়াচ্ছেন প্যারেট পোকা নামের এ মাছি। শেরপুরে এ পোকা আর কোথাও দেখা যায়নি এর আগে। তাই এ পোকা দেখতে ভিড় জমায় স্থানীয়রা।

উদ্যোক্তা শফিকুর রহমান বলেন, ২০২১ সালের শেষ দিকে গাইবান্ধা থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা খরচ করে এক কেজি মাছির লার্ভা ক্রয় করার মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করি। ৬ থেকে ৭ মাসেই আমাদের খামারে ২ হাজার ৭০০ কেজি লার্ভা উৎপাদন হয়। আমরা দুইমাস থেকে পারিবারিক সমস্যার কারণে একটু সময় কম দেওয়ায় উৎপাদন কমেছে। এখন আবার সময় দেওয়া শুরু করেছি। আশা করি উৎপাদন আগের মত হবে। অল্প খরচে স্বল্প জায়গায় এই মাছি চাষাবাদ করে আমরা ব্যাপক সাফল্য পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা যে খাওয়া ফেলে দেই। ওই উচ্ছিষ্ট খাবারই এই মাছির প্রধান খাদ্য। বিভিন্ন মানুষের বাসা-বাড়ি, বাজার থেকে ফেলে দেওয়া খাদ্য-দ্রব্য (মুরগির বিষ্ঠা, পচা সবজি ও মাছের আঁইশ) সংগ্রহ করে খামারে নিয়ে আসি। এবং এগুলো মাছিদের খেতে দেই। এতে যেমন পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা যায় তেমন একদিকে তাদের খাদ্যের ুযোগান হয়। এই মাছি কোন জীবাণু বহন না করায় এটি মাছ মুরগীর একটি আদর্শ খাদ্য। ভবিষ্যতে আমি আরো বড় পরিসরে চাষাবাদ করতে চাই প্রাণী সম্পদের সহযোগিতা পেলে। আর পাশাপাশি মানুষের মাঝে উপকারী এই মাছি চাষাবাদ পদ্ধতি পৌঁছে দেওয়ার ইচ্ছেও আছে আমার।

শফিকুরের স্ত্রী জেসমিন আক্তার বলেন, আমি আমার স্বামীর খামারে একসঙ্গে কাজ করি। দেশি মুরগির খামার আছে আমার এ পোকা বা মাছির লার্ভা খাইয়ে আমরা বেশ লাভবান। লার্ভা খেয়ে মুরগী সহজেই বড় স্বাস্থ্যবান হচ্ছে এবং ডিমও দিচ্ছে বেশি। আমরা এখনো বিক্রি শুরু করিনি। আমরা আমাদের খামারের মুরগিদের খাওয়াচ্ছি আপাতত। এখন বড় আকারে বিক্রির জন্য চাষ শুরু করেছি। আশপাশের অনেকেই আগ্রহী হয়ে দেখতে আসছে এই মাছির খামার। অনেকেই এটি ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

নকলা শহরের বাসিন্দা মোশাররফ হোসেন বলেন, এই পোকা বাস্তবে এই প্রথম দেখলাম আমি। ইউটিউবে আমি এর আগেও দেখছি। আমরাও এ পোকা চাষ করব।

জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ জেলায় প্রথমবারের মত শফিকুর এ প্যারেট পোকার চাষ করছে। বাজারে প্রচলিত খাদ্যেরচেয়ে এই খাদ্য অনেক বেশি মানসম্পন্ন হওয়ায় মাছ ও মুরগীর জন্য অনেক উপকারী। অল্প খরচে ছোট জায়গায় এটি চাষ করে লাভবান হওয়া সম্ভব। তার এ কাজে সকল ধরনের সহায়তা করবো আমরা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close