এইচ আর তুহিন, যশোর

  ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২

অসময়ের শিমে স্বপ্ন বুনছেন মনিরামপুরের কৃষক

যশোরের মনিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জের অঞ্চলে মাঠে মাঠে শীতকালীন আগাম জাতের হাইব্রিড শিম খেত নয়ন জুড়িয়ে দিচ্ছে। চাষে ভালো ফলনও পাচ্ছেন কৃষক। অর্ধশত চাষি প্রায় শত বিঘা জমিতে অসময়ের শিম চাষ করেছেন। মাঠজুড়ে ফুলেফলে সমারোহ হাইব্রিড আগাম জাতের শিম গাছ মানুষের হৃদয় কাড়ছে। আর লাভের স্বপ্ন বুনছেন অর্ধশত কৃষক।

চাষিরা জানান, শিম চাষের পূর্বে অল্প খরচে বানের উপর ঝিঙে ও পটলের চাষ করেছিলেন চাষিরা। অল্প সময়ে ঝিঙে চাষ শেষ হতেই ওই বানেই শিম চাষের উদোগ নেন চাষিরা। জমি তৈরি ছাড়াই জৈষ্ঠ মাসের শেষের দিকে ওই বানের নীচ দিয়ে শিম বীজ রোপণ করেন চাষিরা। এ জাতের শিমের বীজ রোপণের ৪৫ থেকে ৫০ দিনের মধ্যে ফুলফল চলে আসে।

রাজগঞ্জের এলাকায় পিচের রাস্তা ধরে ত্রিমোহিনী যাওয়ার পথে চোখে পড়ছে ফুলেফলে শিমের সবুজ সমারোহ। হাকিমপুর ও হরিশপুর মাঠে শতশত বিঘা জমির বানের উপর দোল খাচ্ছে শিমের লাল সাদা ও হাল্কা গোলাপী ফুল। কাছে যেতেই চোখে পড়ে প্রতিটি ছোড়ের ফুলের নীচে ঝুলছে থোকায় থোকায় শিম।

সরেজমিনে মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, খেতে কেউ ব্যস্ত কীটনাশক প্রয়োগে, আবার কেউ শিম ওঠাতে। পাশের একটি খেতে চোখ পড়তেই দেখা মেলে এক নারীর। কাছে যেতেই দেখা যায় কাঁচি দিয়ে শিমের ডোগা কাটছেন। তিনি বলেন, ‘শিম গাছের ওই ডোগায় কোন ফুলফল হয় না। যার কারণে ওই সকল শিমের ডোগা কেটে গরু ছাগলের খাদ্যের ব?্যবস্থা করছি।’

হাকিমপুর গ্রামের আ. হান্নান বলেন, ‘অফ সিজনে শিমের চাষ করছি, তাই পোকার উপদ্রব কিছুটা বেশি। দুই-একদিন পর পর বিষ স্প্রে করতে হচ্ছে।’ আজগার আলী বলেন, ৭৪ শতক জমিতে শিম চাষে খরচ প্রায় ১ লাখ টাকা। ফুল-ফল দেখে আশা করছি প্রায় চার লাখ টাকার শিম বিক্রি করতে পারব। এরই মধ্যে প্রায় ২০ দিন আগে থেকে শিম বিক্রি করছি। অসময়ের শিম তাই প্রতি কেজি ১২০ থেকে দেড়শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে পেরেছি।

হরিশপুর গ্রামের আবুল হাসেম বলেন, আমি শিম চাষের পূর্বে এই ৪৮ শতক জমিতে ঝিঙের চাষ করেছিলাম। সেখানে বান বানানোসহ চাষে ১৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছিল। ঝিঙে বিক্রি করেছিলাম প্রায় ৩০ হাজার টাকা। পরে ওই ৪৮ শতক জমির বানের উপরে হাইব্রিড শিম চাষ করেছি। হরিশপুর গ্রামের অভিজ্ঞ চাষি মুক্তার বলেন, আমার মতো এই মাঠে দুই তিন গ্রামের প্রায় অর্ধশত চাষি প্রায় শত বিঘা জমিতে আগামজাতের শিম চাষ করেছেন। অসময়ে শিম চাষ করাতে রোগ ব্যাধি অনেকটা বেশি দেখা দিচ্ছে। কীটনাশক দমনের জন্য আমরা বাইসালফান ও নীল জাতীয় ওষুধ প্রয়োগ করছি।

এ বিষয়ে চালুয়াহাটি ইউনিয়ান কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা মারুফুল হক ও হাবিবুর রহমান বলেন, অসময়ে শিম চাষ হলেও গাছ ও ফুলফল সব দিকে ভালো। আমি সব সময় শিমখেত দেখাশোনা করি। চাষিদের নানা পরামর্শ দিয়েছি। আশা করছি শিম চাষে চাষিরা লাভবান হবে এই বছর।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close