হাফিজুর রহমান, ধনবাড়ী (টাঙ্গাইল)

  ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

ধনবাড়ীতে সড়ক দখল করে অটোরিকশা স্ট্যান্ড

সড়কের পাশে অটোরিকশা মেরামতের দোকান * সড়কে রেখেই করা হয় মেরামত * যানজটের কারণে পথচারীদের ভোগান্তি

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে সিএনজি চালিত অটোরিকশার দখলে পৌর শহরের ঈদ গাঁ সড়কটি। সড়কটি সংস্কারের পরেই দখলে নিয়েছে অটোরিকশা চালকরা। সড়কের পাশে অটোরিকশা মেরামতে দোকান। সড়কে অটোরিকশা রেখে মেরামত করা হচ্ছে। এতে পথচারীরা ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করেছে, সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের।

স্থানীয়রা জানান, সড়কটি শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এ সড়কে দিয়ে পাঁচণ্ডছয়টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা চলাচল করে। এছাড়াও ধনবাড়ীর ঐতিহ্য জমিদার বাড়ী, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, পল্লী বিদ্যুৎ অফিস ও অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এ সড়ক দিয়েই যাতায়াত করা হয়। সড়কে অবৈধ পার্কিং-এর কারণে চলাচলে সবাইকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। নিষেধ করলেও মানছেন না চালকরা। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি তাদের।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্র বাসস্ট্যান্ড হতে ঈদগাঁ সড়কটি চলে গেছে জমিদার বাড়ী হয়ে উপজেলার বিভিন্ন দিকে। সড়কের দুই পাশ রয়েছে নবাবী আমলের প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ অফিস, স্কুল-কলেজ ও বাসভবন। চলাচল করছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, জরুরি সেবার গাড়ি, কর্মজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষ। কিন্তু সড়কের দুই পাশ জুড়ে অটোরিকশা রাখায় সড়কটি সরু হয়ে গেছে। সড়কের পাশে অটোরিকশা মেরামতের দোকান। সড়কে একাধিক অটোরিকশা রেখে মেরামত করা হচ্ছে। এতে পথচারীরা ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করেছে, সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের। সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা।

পৌরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল ঈদগাঁ সড়কটি সংস্কারের। দীর্ঘদিন বর্ষার সময় হাটু পানিতে থাকত এই সড়কটি। সম্প্রতি ধনবাড়ী পৌরসভার নব নির্বাচিত মেয়র মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান বকল দায়িত্বভার পাওয়ার পর নিয়মানুযায়ী দ্রুত এ সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে স্বল্প সময়ের ভিতরেই শেষ করেছেন নির্মাণ কাজ। এতোদিনের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে নতুন দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সড়কটিতে অবৈধ পার্কিং। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে পথচারীদের।

মুদি ব্যবসায়ী সুজন সরকার ও আব্দুল মালেক বলেন, আগে সামান্য বৃষ্টিতে সড়কে হাঁটু পানি জমতো। মেয়রের উদ্যোগে সংস্কার করা হলেও এখন আরেক ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। বাসস্ট্যান্ডে বিভিন্ন এলাকার অটোরিকশা চালকেরা অবাধে তাদের গাড়ি রাখেন। গত কয়েক দিনে আরও বেচাকেনা কমে গেছে।

ওষুধ ব্যবসায়ী ফিরোজ হোসেন বলেন, অটোরিকশা চালকদের বারবার না করি। কোন কাজই হয় না। মেয়রও মাঝমাঝে এসে অটোরিকশা রাখতে নিষেধ করলে তখন সরিয়ে নিলেও পরবর্তী সময়ে আবার রাখে।

আসিয়া হাসান আলী মহিলা ডিগ্রী কলেজের শিক্ষার্থী আকলিমা জাহান আলো, অনামিকা ইয়াসমিন ও আছমা আক্তার বলেন, সব সময়ই এভাবে অটোরিকশা রাখা হয়। যাতায়তে অনেক সমস্যা হয়। কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করি।

সরকারি নওয়াব ইনস্টিটিউশনের ছাত্র নাজমুল হাসান তালুকদার ও নিরব হোসেন বলেন, অটোরিকশা জটের কারণে স্কুলে পৌঁছাতে দেরি হয়। সব সময় রাস্তাতে জট লাগিয়ে রাখে সিএনজি চালকেরা।

স্থানীয় শাহদত হোসেন বলেন, এ রাস্তার আগে ছিল হাঁটু পানি সমস্যা। আর এখন অটোরিকশা রাখায় সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।

অটোরিকশা চালক রাশেদ মিয়া বলেন, সামান্য সময়ের জন্য অটোরিকশা রেখে বিশ্রাম নেই। একাধিক অটোরিকশা রাখায় ভোগান্তিতে পড়েন পথচারীরা। অপর চালক কাদের হোসেন বলেন, অনেক সময় যানজটের সৃষ্টি হয় দুপাশে অটোরিকশা রাখার কারণে কিন্তু কেউ তো রাখা বাদ দেন না। এ সুযোগে চালকেরা এখানে অটোরিকশা রাখেন।

উপজেলা সিএনজি-অটোরিকশা সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল বলেন, সড়কটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ। চালকদের ওই স্থানে সিএনজি-অটোরিকশা রাখা নিষেধ করা হবে এবং দ্রুতই পদক্ষেপ নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে পৌরসভার মেয়র মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান বকল বলেন, দীর্ঘদিন পৌরবাসীর দাবি ছিল সড়কটি সংস্কারের। কাজটি সম্প্রতি শেষ হয়েছে। এদিকে সিএনজি-অটোরিকশা ওইখানে জট বেধে না রাখার বিষয়ে চালকদের সতর্ক করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close