গাজী শাহাদত হোসেন ফিরোজী, সিরাজগঞ্জ

  ১৭ আগস্ট, ২০২২

সিরাজগঞ্জে যমুনার ভাঙন

তীরে ফেলা জিওব্যাগ ভেসে গেছে স্রোতে

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে যমুনার ভাঙন রোধে নদী তীরে ফেলা জিওব্যাগ পানির তোরে ভেসে গেছে। আর এতেই ভিটেমাটি হারাচ্ছে নদী পাড়ের অসহায় মানুষ। উপজেলার খুকনি ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগ্রাম-পাঁচিল ও গালা ইউনিয়নের মাজ্জান-বিনোটিয়া এলাকায় বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে। অপরদিকে এনায়েতপুরের ব্রাহ্মণগ্রাম থেকে কৈজুড়ীর মনাকোশা পর্যন্ত তীর সংরক্ষণ বাঁধ ৬৪৫ কোটি টাকার কাজ চলতি বছর থেকে শুরু হয়। প্রথম পর্যায়ে ১৯টি প্যাকেজের আওতায় জিওব্যাগ ডাম্পিং করা হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ কাজে ত্রুটি থাকায় জিওব্যাগগুলো পানির স্রোতে ভেসে গেছে।

স্থানীয়রা জানায়, সম্প্রতি সেসব জিওব্যাগ ভেসে যাওয়ায় ব্রাহ্মণগ্রাম, আড়কান্দি, মনাকোষা গ্রাম এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। বস্তায় বালু কম দেওয়া, প্রয়োজনের তুলনায় কম সংখ্যক বস্তা ফেলা, সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় স্থানে বস্তা না ফেলা। এসব কারণে বস্তা ফেলা হলেও সামান্য স্রোতেই কয়েক দিন পর তা ধসে গিয়ে ভাঙছে নদী তীর। ভিটেমাটি হারাচ্ছে নদী পারের মানুষ।

ব্রাহ্মণগ্রামের আনোয়ার সরকার, শামছুল ভূঁইয়া ও ইয়াকুব আলী জানান বর্ষা মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গে যমুনা নদীর পশ্চিম তীরবর্তী গ্রামগুলোতে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। এ ভাঙনের তান্ডবে ব্রাহ্মণগ্রাম, আরকান্দি, ঘাটাবাড়ি, জালালপুর, পাকরতলা, ভেকা, হাটপাঁচিল, শরিফ মোড়, মাজ্জান, ফকিরপাড়া ও বিনোটিয়া গ্রামের শতাধিক বাড়িঘর এরই মধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

তারা আরো জানান, ভাঙনে মাজ্জান, ফকিরপাড়া ও বিনোটিয়া এলাকায় নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধ ধসে গেছে। জগতলা ও মাজ্জান এলাকায় যমুনা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। অপরদিকে ভাঙনকবলিত এলাকায় জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রোধে বালু ভর্তি জিওব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করেছে। ঠিকাদারের লোকজন সঠিকভাবে কাজ না করায় এ ব্যাগ ফেলা কোনো কাজেই আসছে না। এসব ব্যাগ ফেলার কয়েক দিন পরেই সামান্য স্রোতেই ওই বস্তাগুলো ধসে সেখানে ভাঙন দেখা দিচ্ছে বলে জানান তারা।

৫ নম্বর এলাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাজওয়া ট্রেড সিস্টেম লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মো. রুবেল বলেন, ‘আমরা প্রথমত জিওব্যাগ বালুভর্তি করি। পরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের টাস্কফোর্স কমিটি দেখে নিশ্চিত করার পর ওই বস্তাগুলো নদীতে ফেলা হয়। আমাদের কাজে কোনো অনিয়মণ্ডদুর্নীতি হচ্ছে না।’

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী নাজমুল হোসাইন জানান, ব্রাহ্মণগ্রাম এলাকায় ভাঙন ঠেকাতে বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে। কিন্তু জিওব্যাগ ফেলতে কোনো অনিয়মণ্ডদুর্নীতি হচ্ছে না। যতই ভালো কাজ করা হয় না কেন, যখন ভাঙন শুরু হয় তখন ওই এলাকার মানুষ অভিযোগ দেবে এটাই স্বাভাবিক হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, জিও ব্যাগে বালু ভর্তির পর ঢাকা থেকে টাস্কফোর্স কমিটির একজন সদস্য এসে বালুভর্তি জিওব্যাগের গুণগতমান নিশ্চিত করেন। এরপর সেই বস্তা নদীতে ফেলা হয়। তারপরও যদি কোথাও অনিয়ম হয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close