মাহমুদুল হাসান, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী)

  ১২ আগস্ট, ২০২২

স্বস্তির বৃষ্টিতে খুশি কৃষক

রাঙ্গাবালীতে কয়েক সপ্তাহ ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় প্রচন্ড খরায় ধানের চারা, শাকসবজিসহ খেতের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। আষাঢ় মাসে বৃষ্টির দেখা মেলেনি। তবে শ্রাবণ ও শেষের দিকে দুশ্চিন্তায় ছিল কৃষকরা। বৃষ্টি না হওয়ায় রোদে পুড়ে খেতের সবুজ চারা লালচে হয়ে গেছে।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকরা ইস্তিসকার নামাজ আদায় করে আল্লাহর দরবারে বৃষ্টির জন্য দোয়া চেয়েছেন। অবশেষে দেখা মিললো বৃষ্টির। সোমবার সকাল থেকে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি দেখে চিন্তিত মুখে হটাৎ হাসি ফুটেছে কৃষকের।

টানা কয়েক সপ্তাহের তীব্র খরার পর স্বস্তির বৃষ্টি পেয়ে আমন চাষে ব্যস্ত হয়ে পরেছে কৃষকরা। বর্ষায় সেচ বিহীন কম খরচে আমন ধান চাষ করে লাভের স্বপ্ন দেখছেন তারা। বৃষ্টি হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে স্বস্তি দেখা দিয়েছে। জমিতে চাষ দেওয়া, আগাছা পারষ্কার করা, সার দেওয়া, খেতে পানি দেওয়াসহ নানান কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষক।

উপজেলার বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের কৃষক সোহেল ইসলাম বলেন, চলতি মৌসুমে তিনি ৩ একর জমিতে আমন ধান চাষ করবেন। বৃষ্টি না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় ছিলেন তিনি। এখন বৃষ্টি দেখছি। তাই হয়তো সময়মতো ধান লাগাতে পারবো।

মৌডুবী ইউনিয়নের কৃষক মাহাতাব ভূইয়া বলেন, আমি এ বছর ৫ একর জমিতে আমন ধান চাষ করবো। মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় বীজতলা লাগানোর সময় সেচ দিয়ে খেতে ধান ফালাইতে হইছে। আমাদের বাড়তি খরচ হয়েছে। শ্রাবণের শেষের দিকে বৃষ্টি হয়েছে। আর কিছু কিছু যায়গায় বৃষ্টির পানি জমিয়েছে। তাই বৃষ্টি পেয়ে মনের আনন্দে পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষ করতে মাঠে নেমে পড়েছি। এখন পুরোদমে চলছে চারা রোপণ।

একই গ্রামের কৃষক নাইমুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টির ওপর নির্ভর করে আমরা আমন চাষ করে থাকি। কিন্তু এ বছর বৃষ্টি না হওয়ায় সেচ দিয়ে আমি ৩০ কেজি ধান চারার জন্য খেতে ফালাই প্রথম দিকে ভালোই হইছিল। কিন্তু তীব্র খরায় আমার ওই চারাগুলি লালচে (জ¦লে) হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এর পরে আবার বাড়তি টাকা খরচ করে নতুন ভাবে ধান ফালাইতে হইছে। একেতো তীব্র খরা ছিল এর মধ্যে বেড়েছে জ¦ালানি তেলের দাম, এখন আমাদের কৃষকদের কি করার আছে। ঠিক মতো বৃষ্টি না হলে আমরা কৃষি কাজ করতে পারবো না। অনেকদিন পরে বৃষ্টি হয়েছে। আমাদের সাড়ে ৬ একর জমিতে আমন ধান চাষ করবো।

উল্লেখ্য, চলতি মৌসুমে এ উপজেলার ৬ ইউনিয়নে আমন আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮ হাজার ২৭৮ হেক্টর। কৃষি অফিসের লক্ষ্যমাত্রা ২৯ হেক্টর ছাড়িয়ে যাবে। তবে তারা মনে করছে বৃষ্টি হলে তাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও আমন চাষ বেশি হতে পারে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইকবাল আহমেদ বলেন, দুইদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। আর এই বৃষ্টি পেয়ে কৃষকরা মাঠে নেমে পড়েছে। বৃষ্টি পেয়ে কিছু কিছু কৃষকরা আমন রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এভাবে বৃষ্টি হলে কৃষক সম্পূর্ন ভাবে আমন চাষ করে উঠতে পারবে। আমরা মাঠ পর্যায়ে সকল কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close