সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
টুংটুং শব্দে মুখরিত কামারপাড়া
কোরবানি ঈদ সামনে রেখে টুংটুং শব্দে মুখরিত হয় উঠেছে সিরাজগঞ্জের কামারপাড়া। জেলার বিভিন্ন এলাকার কামারদের ব্যস্ততা বেড়েছে। হাতুড়ি পেটার শব্দে মুখর সিরাজগঞ্জ কামারপাড়াগুলো। সারাদিন তপ্ত ইস্পাত গলিয়ে চলছে, দা, বটি, ছুরি তৈরির কাজ। দম ফেলারও সময় নেই কামারদের। নাওয়া-খাওয়া ভুলে কাজ করছেন তারা। কাকডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছেন।
কামারপাড়ায় এখন গেলেই শোনা যায় হাতুড়ি পেটানোর শব্দ। কেউ ভারী হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছেন আগুনরঙ্গা লোহার খণ্ড। কেউ পোড়া দা ও ছুরিতে দিচ্ছেন শান। কেউবা হাঁপর টেনে বাতাস দিচ্ছেন।
জেলার বিভিন্ন কামারের দোকান ঘুরে দেখা যায়, দা, ছুরি, চাকু ও বঁটির বেচাকেনা বেড়েছে। তবে কামারপাড়ার কারিগররা অভিযাগ করেন, তাদের পরিশ্রমের তুলনায় মজুরি অনেক কম। জানা গেছে, এ বছর প্রতি পিস চাকু ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, দা ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, ৬০০ টাকা কেজি দরে চাপাতি, জবাই ছুরি ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করছেন কামাররা। এছাড়াও পুরোনো সব যন্ত্রপাতি শান দিতে গুনতে হচ্ছে ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। সারা বছর তেমন কাজ না থাকায় অনেকেই বাধ্য হয়ে পৈতৃক এই পেশা পরিবর্তন করছেন বলে জানা গেছে।
জেলার কামারখন্দ, বেলকুচি, কাজিপুর, সিরাজগঞ্জ সদরসহ বিভিন্ন উপজেলার কামাররা বলেন, সারা বছর আমাদের মোটামুটি বিক্রি হয়। তবে কোরবানি ঈদে বিক্রি হয় সবচেয়ে বেশি। এই সময় ভালোই আয় হয়।
কামারখন্দ উপজলার জামতৈল গ্রামের রনজিৎ কামার, বদন কামার ও প্রভাত কামার জানান, কোরবানি ঈদে তারা প্রতি বছর দা, ছুরি, চাপাতিসহ বিভিন্ন উপকরণ তৈরি করেন। বর্তমানে লোহা ও কয়লার দাম অনেক বেড়েছে। সে তুলনায় কামার শিল্পের উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি। তাদের আশা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ শিল্প আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কান্দাপাড়া হাটে কিনতে আসা আবদুল মান্নান, ওহাব, রইজ উদ্দিনসহ কয়েকজন ক্রেতা জানান, কোরবানি ঈদের কিছুদিন বাকি তাই আগেই পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম কেনার কাজটি সেরে ফেলছি। তবে অন্য বছরের চেয়ে এবার ছুরি, চাকু, বঁটির দাম একটু বেশি বলে জানান তারা।
"