মারুফ আহমেদ, কুমিল্লা

  ২৯ জুন, ২০২২

কোরবানিকে ঘিরে ব্যস্ত কুমিল্লার খামারিরা

কোরবানীর ঈদকে কেন্দ্র করে পশু পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কুমিল্লার খামারিরা। খামারিরা বলছেন এবার জেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণ পশু রয়েছে, তাই পাশর্^বর্তী দেশ ভারত হতে গরু প্রবেশ করলে ক্ষতির মুখে পড়বেন তারা। জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগও বলছেন এবার কুমিল্লাতেই পশু রয়েছে চাহিদার তুলনায় বেশি।

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় এবার দুই লক্ষ আটচল্লিশ হাজার পশু কোরবানীর চাহিদা আছে। তার বিপরীতে এবার পশু রয়েছে দুই লক্ষ আটান্ন হাজার চারশ বত্রিশটি। প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তারা বলছেন জেলায় কোরবানীর জন্য যে পরিমাণ পশু রয়েছর তাতে চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ১০ হাজারের অধিক পশু উদ্বৃত্ত থাকবে।

এদিকে কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে পশু পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কুমিল্লার খামারিরা। কোনো রাসায়নিক ওষুধ বা হরমোনজাতীয় ইনজেকশন প্রয়োগ না করে প্রতি বছরের মতো এবারও সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে গরু, মহিষ, ছাগল মোটাতাজা করা হচ্ছে।

সদর উপজেলার খামারি জাহিদ বলেন, আমরা গরুকে কোনো প্রকারের রাসায়নিক খাদ্য দিচ্ছি না। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক দানাদার খাবার, ঘাস এসবই খাওয়ানো হচ্ছে।

বুড়িচং উপজেলার ময়নামতির আরেকজন খামারী সোহাগ বলেন, আমার খামারে এই মুহূর্তে দেশী, শাহীওয়াল, ফিজিয়ান, ফিজিয়ান ক্রস জাতের গরু রয়েছে। আমার এখানে ৪০০ থেকে ১ হাজার ১০০ কেজি ওজনের পর্যন্ত গরু রয়েছে।

জেলার সদর উপজেলার উত্তর দূর্গাপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের খামারী নুর আলম জানান, আমার খামারে ১০০ এর অধিক বিক্রি উপযোগী গরু রয়েছে। যা আমি এবারের ঈদে বিক্রি করবো। ১ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা মূল্য পর্যন্ত গরু রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এবার পশুর সঠিক দাম পেলে তাই আগামীতে গো-খামার আরো বাড়বে কিন্তু পশুর দাম না পেলে অনেক খামারী নিস্ব হয়ে পড়বে। খামারীরা আরো জানান, এবার জেলার অনেক গ্রাম অঞ্চলে বড় ষাড় পালন করছেন ছোট-বড় খামারীরা। চড়া দামের খর, খৈল, গমের ভাত, কাচা ঘাস, ভুষি ও নালী, খাবার দিয়ে এসব গরু মোটা-তাজা করাহচ্ছে। তাদের এসব গরু ঈদ হাটে বিক্রি করে তারা লাভবান হবেন।

এদিকে ঈদকে সামনে রেখে পশু কোরবানী নির্বিঘœ করতে জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগও নানা কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন। প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর কুমিল্লার কর্মকর্তারা জানান, এবার সঠিক পদ্ধতিতে পশু জবাই, চামড়া ছাড়ানো সংরক্ষণ বিষয়ে ৪৪৫ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বাজার গুলোতে রাখা হচ্ছে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম এছাড়াও মনিটরিং করা হচ্ছে গরু হৃষ্টপুষ্টকরণের সাথে জড়িত খামারীদের।

জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, কোরবানীর ঈদকে ঘিরে এবছর আমাদের পর্যাপ্ত পশু মজুদ রয়েছে এবং উদ্বৃত্তও থাকবে। আমাদের এবার প্রায় ৮১টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম বিভিন্ন উপজেলার হাটগুলোতে ক্রেতাণ্ডবিক্রেতাকে চাহিদমত সেবা দিবে। ইন্ডিয়া হতে এবার যাতে গরু না আসতে পারে সে ব্যাপারে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। আমরা কড়াকড়িভাবে বিষয়টি মনিটরিং করছি। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথেও এবিষয়ে আমাদের কথা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close