রাজবাড়ী প্রতিনিধি

  ২৬ জুন, ২০২২

পদ্মা সেতু উদ্বোধনে ছুঁয়ে গেল আনন্দ

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আনন্দ ছুঁয়ে গেছে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরির জন্য অপেক্ষমাণ সবাইকে। ঘাটে শত শত যানবাহন ফেরির অপেক্ষায়। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন এসব যানবাহনের যাত্রী ও শ্রমিকরা। দুর্ভোগ আর অপেক্ষার মাঝেও তাদের মনে ছুঁয়ে গেছে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আনন্দ।

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ঘাট এলাকায় পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসা দর্শনার্থীরা যখন আনন্দ করছিলেন, সেই সময় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আরেক গুরুত্বপূর্ণ এলাকা রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে শত শত যানবাহন আটকে ছিল ফেরি পারের অপেক্ষায়। এমন দুর্ভোগের মধ্যেও পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আনন্দ ছুঁয়ে যায় এসব যানবাহনের যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের।

গতকাল শনিবার সকালে যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাওয়া প্রান্তে বহুল কাক্সিক্ষত পদ্মা সেতু উদ্বোধন করছিলেন, ঠিক সে সময় দৌলতদিয়া ঘাটে অবস্থান করছিলেন ব্যবসায়ী মো. ফরিদ উদ্দিন। বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার গ্রামের বাড়ি থেকে পরিবারের সবাই মিলে ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় যাচ্ছিলেন। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দৌলতদিয়া ৫ নম্বর ফেরিঘাট সড়কে বরিশাল থেকে আসা একটি বাসে বসে ফেরির জন্য অপেক্ষা করছিলেন তারা। আগামীকাল সোমবার পদ্মা সেতু দিয়ে গ্রামের বাড়ি যাবেন জানিয়ে ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘গত বুধবার গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম। আমাদের এক আত্মীয় মারা যাওয়ায় ঢাকায় যাচ্ছি। সেখান থেকে নারায়ণগঞ্জে যাব। এই ঘাট দিয়ে নদী পাড়ি দেওয়া হয়তো এটাই শেষ। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে আসা হবে না।’

ফরিদ উদ্দিন আরো বলেন, ব্যবসার সুবাদে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় থাকতে হয়। গ্রামের বাড়ি বরিশালে হওয়ায় বাসে গেলে ফেরিঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হতো। একদিকে যেমন অনেক সময় লাগত, অন্যদিকে টাকাও খরচ হতো অনেক। এখন সে সমস্যা মিটল।

স্বামীর কথার শেষে বাসের পেছনের আসনে বসা স্ত্রী খাদিজা বেগম বলেন, ‘এই মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু উদ্বোধন করছেন আর আমরা দৌলতদিয়ায় ফেরির জন্য ঘাটে বসে আছি। তবে এখানে জ্যামে বসে থাকলেও আমাদের জন্য অনেক আনন্দের সংবাদ এটা। এখন আর আমাদের বাড়ি যেতে ঘাটে অপেক্ষা করতে হবে না। শেষবারের মতো দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে নদী পাড়ি দিচ্ছি বলে এই ভ্রমণও অনেক দিন মনে থাকবে।’

গতকাল দুপুরে দৌলতদিয়া ঘাটে দেখা যায়, ফেরিঘাট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দের ওয়াজেদ চৌধুরী টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার ঢাকামুখী যানবাহনের সারি। এর মধ্যে বেশির ভাগ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পণ্যবাহী গাড়ি। ফেরিঘাট এলাকার প্রায় এক কিলোমিটার সড়কে পণ্যবাহী গাড়ির সঙ্গে যাত্রীবাহী বাসও অনেক। পদ্মা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠান অনেকেই মোবাইল ফোনে নেটে দেখছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুর উদ্বোধন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে তারা আনন্দে ফেটে পড়েন। তাদের সবার মুখে হাসি দেখা যায়। সবাই আশায় রয়েছেন, এই সেতু চালু হলে তাদের ফেরি পারের ভোগান্তি আর থাকবে না। সরাসরি সেতু হয়ে চলাচলে অনেক সময় বাঁচবে, দুর্ভোগ কমে যাবে। সেতু উদ্বোধনের খবরে সবার মাঝে স্বস্তি দেখা গেছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close