আবদুল আজিজ, হিলি (দিনাজপুর)
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
দিনাজপুরের হাকিমপুর (হিলি) উপজেলার কলন্দর্পপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম সাজ্জাদ হোসেনের বিরুদ্ধেঅনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের ২০২০-২০২১ এবং ২০২১-২০২২ সালের বিভিন্ন বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ, অভিভাবকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ এবং শ্রেণিকক্ষে পাঠদান না করার বিষয় উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উক্ত বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি, সহকারী শিক্ষকসহ অভিভাবকদের জেরার মুখে প্রধান শিক্ষক সাজ্জাদ হোসেন। চার বছরেও তিনি কোন শ্রেণি কক্ষে পাঠদান করেননি। বিদ্যালয়ের বরাদ্দকৃত সকল টাকা আত্মসাৎ করেছেন। নতুন ফ্যান বাড়ি নিয়ে গিয়ে পুরাতন ফ্যান জমা দিয়েছেন। স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে ছাত্র-ছাত্রীদের খেলাধুলার উপহার না দেওয়া এবং অভিভাবকদের সঙ্গেদুর্ব্যবহার করেছেন। এসব অভিযোগে অভিযুক্ত তিনি। এই প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের কারণে অতিষ্ঠ বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রেকাব উদ্দিন বলেন, আমাদের এই প্রধান শিক্ষকের কারণে আমরা কলঙ্কিত। তার বিরুদ্ধে লিখিতভাবে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে। তিনি বিদ্যালয়ে আসেন আর চলে যান, ক্লাস নেন না। আমরা চাই তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
একজন অভিভাবক জহুরুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে এই স্কুলে পড়ে। ছেলে-মেয়েদের জন্য অনেক সরকারি বরাদ্দ আসে। আমার ছেলে কোন কিছু পায় না। স্কুল ব্যাগ আসছে, তবে সেই ব্যাগ তার বাড়িতে রেখেছে। প্রধান শিক্ষকের নিকট কোন কিছু জানতে চাইলে তিনি আমার সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করেন।
৫ম শ্রেণির ছাত্রী আতিকা বলেন, স্বাধীনতা দিবসে আমি দৌড় খেলায় প্রথম স্থান অধিকার অর্জন করি। কিন্তু আমাকে কোন পুরষ্কার দেওয়া হয়নি। পুরস্কারের বিষয়ে প্রধান শিক্ষককে বললে তিনি রাগ করেন। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মর্তুজা মন্ডল বলেন, আমার স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনেক অনিয়মণ্ডদুর্নীতির অভিযোগ আছে। আমরা লিখিতভাবে সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছি। তিনি স্কুলের সকল বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করেন। আমার নিকট সই নিয়ে নিজে টাকা উত্তোলন করে নেন। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
অনিয়ম-দুর্নীতির কথা জানতে চাইলে কলন্দরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম সাজ্জাদ হোসেন জানান, আমার বিরুদ্ধে সবাই ষড়যন্ত্র করছে। এগুলো মিথ্যা, তবে আমার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ হয়েছে, তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আপনারা সব জানতে পারবেন।
হাকিমপুর প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন, কলন্দর্পপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগের সঠিক তদন্ত করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমাকে বলেছেন। আমরা তদন্ত শুরু করে দিয়েছি। অল্প দিনের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নুর-এ-আলম বলেন, কলন্দর্পপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
"